সৌম্যকে ‘নতুন সূর্য‘ আখ্যা দিল ভারতীয় মিডিয়া

বয়স মাত্র ২২ বছর। এই বয়সেই বাংলাদেশের অন্যতম তারকা হতে চলেছেন সৌম্য সরকার। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করে নজর কাড়লেন ক্রিকেটমোদিদের। ভারতীয় পত্রিকাতো তাকে ‘নতুন সূর্য’ বলেই আখ্যা দিল।

‘সংবাদ প্রতিদিন’ নামের পত্রিকার সাংবাদিক অভিজ্ঞান সাহা লিখেছেন, ‘ওপার বাংলার (বাংলাদেশ) নতুন সূর্য সৌম্য সরকার।’ তাই আগামী ১৯ মার্চ কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের পরিকল্পনায় থাকছেন বাংলাদেশের এই উদীয়মান তারকাও।

সৌম্য সরকারকে নিয়ে অভিজ্ঞান সাহার প্রতিবেদনটি আওয়ার নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

মাঠে ঝড় তুলে মানুষকে আনন্দ দেওয়া তারকারা কি ব্যক্তিগত জীবনেও গতিতে ছুটতে ভালবাসেন? তাই যদি না হবে, তা হলে ধোনি, কোহলিরা এমন কেন? গতির লড়াই দেখতে ভালবাসেন। গতির সঙ্গে ছুটতে চায় মনও। এবার সেই দল ভারী করলেন সৌম্য সরকার। ওপার বাংলার (বাংলাদেশের) ‘নতুন সূর্য’ সৌম্য।

সৌম্য সরকার কে? বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের তিন নম্বরে যে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানটি খেলছেন, তার-ই নাম সৌম্য। গর্ব হয়। ভালো লাগে তাদের প্র্যাকটিসে গিয়ে দশ হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও। জনা পনেরো বাঙালি বাংলা বলছেন।

কলকাতার সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে ইডেনে খেলার স্বপ্ন ছিল সৌম্যর। সেই ইডেনে প্রথম খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি। এমন ছেলেকে কি আপনি ধরে রাখতে পারবেন? কেউ পারেনি। নির্বাচক কমিটির প্রধান ফারুক আহমেদ তাকে দলে নিয়ে আসাতে ঝড় উঠেছিল। কিন্তু তার গোঁ-র কাছে সবাই হেরে যান। আট বছর আগে শাকিব, মুশফিকদের এনে তিনি বুঝিয়েছিলেন, জহুরির চোখে ভুল কিছু ধরা পড়ে না। ওরা প্রমাণ করেছে। সৌম্যও পারবে।

ফারুক ভুল করেননি। সৌম্য কতটা পেরেছে তা গাভাস্কারের কথাতেই পরিষ্কার। মাঠে সেখানে দাঁড়িয়ে যেভাবে কভার ড্রাইভ মেরেছেন সৌম্য, তা দেখে বিষ্মিত গাভাস্কার বলেন, ‘বা-ঁহাতির এমনড্রাইভ দেখলে সৌরভেব কথা মনে পড়ে।’ সেটাই স্বাভাবিক। সৌরভ না এলে সৌম্যও ক্রিকেটে আসতেন না।

বাঙালি মানেই সৌরভে দুর্বলতা! সৌম্যদের বাড়ি আলাদা হবে কী করে। ছোটবেলায় ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে মাঠে নামার সুযোগ তখন হয়নি, ভাইকে ডান হাতে ব্যাট ধরতে দেখে দাদা পুষ্পেন বাধা দেন। ক্রিকেট খেলতে হলে বুঝি বাঁ-হাতে ব্যাট করতে হবে। শুনেছি ছোটবেলায় সৌরভ ডানহাতি হলেও দাদাকে দেখে বা-ঁহাতে ব্যাট করা শুরু করেন। সৌম্য অনেকটা তেমনই। বল করেন ডান হাতে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন ‘সৌরভ-এর ডামি’ হয়ে গেলেন। সেই শুরু। তখনও বোঝা যায়নি, সরকার বাড়ির ছেলে একদিন দেশের হয়ে বিশ্বকাপে খেলবে।

তাই বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ক্রিকেটের পাশে পড়াশোনাও চলল। সমাজবিদ্যা নিয়ে স্নাতক হওয়ার পরও এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। আর আছে যুবরাজ হয়ে ওঠা। ‘সৌরভ হতে পারব কিনা জানি না, যদি যুবরাজ হতে পারি!’ এমনই কথা সৌম্যর। সৌরভের আদর্শে বেড়ে ওঠা সৌম্যর হিরো যে যুবরাজ। তবে এখনো পর্যন্ত তার সঙ্গে দেখা হয়নি। সৌরভের সঙ্গে দেখা হলেও কথা হয়নি।

একদিনের ক্রিকেটে এমন মানসিকতার ছেলে পছন্দ সৌরভের। তাই তার ‘ছেলে’ হয়ে উঠেছিলেন যুবরাজ। মাঠে একইরকম মানসিকতা দেখাচ্ছেন সৌম্য। পারেন কীভাবে? প্রায় ছ’ফুটের কাছে উচচতার সঙ্গে দেহের কাঠামো চোখে পড়ার মতো। ব্যবহার এতটাই শান্তশিষ্ট মনে হবে, এই ছেলে মাঠে কীভাবে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রশ্ন উঠতে সৌম্য বলছিলেন, ‘আমি এমনই খেলি। মারার বল ছাড়ি না। সে আমি যে অবস্থায় ব্যাট করতে নামি না কেন।’



মন্তব্য চালু নেই