বর্ধমান বিস্ফোরণে ‘বাংলাদেশের’ জঙ্গি: সরকার উদ্বিগ্ন নয়

সোমবার আসছে এনআইএ, তদন্ত পরিকল্পনায় ইসলামী ব্যাংক

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর যোগসূত্র নিয়ে আরো তথ্য জোগাড় করতে আগামী সোমবার বাংলাদেশ আসছে দেশটির তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) একটি দল। আইজি সঞ্জীব কুমার সিংয়ের নেতৃত্বে তদন্তকারী দলটি ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় যাবে। প্রাথমিকভাবে রাজশাহী ও সাতক্ষীরার মতো জঙ্গি অধ্যূষিত এলাকাগুলোতে তদন্ত চালাবে এনআইএ। দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে থাকছেন দুই ডিআইজি অনুরাগ টাংখা ও সাজিদ ফারিদ সাপো। সফরকালে তারা বাংলাদেশে আটক কয়েকজন জঙ্গিকে জেরা করার পাশাপাশি কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলবেন। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকও রয়েছে।

ঢাকা ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে দিল্লিকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। গত ১০ নভেম্বর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে দিল্লির লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার কলকাতার দৈনিক বর্তমানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

এনআইএ সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্ধমান বিস্ফোরণে জেএমবির যোগসূত্রের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য তুলে দেয়া হবে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে। কীভাবে ভারতের মাটি ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করার চক্রান্ত করেছিল জঙ্গিরা, সে বিষয়েও জানানো হবে ঢাকাকে।

সম্প্রতি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও গোয়েন্দা বিভাগ জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গিকে আটক করেছে। এনআইএর দাবি, এই জঙ্গিদের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিদের সম্পর্ক রয়েছে। তাদেরকেও জেরা করবে এনআইএ। পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিদের অর্থ জোগানের বিষয়েও বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে কথা কথা বলবে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যে ইসলামি ব্যাংকও রয়েছে।

গত ১১ নভেম্বর দৈনিক বর্তমানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, ওই দিনই এনআইএ এর চার-পাঁচ সদস্যের একটি দিল দিল্লি থেকে ঢাকা পৌঁছাবে। আর ওইদিনই নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা থেকে মনোয়ার হোসেন মনা নামে এক ওয়েল্ডিং মিস্ত্রিকে আটক করে র‌্যাব। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বর্ধমান বিস্ফোরণের ‘অন্যতম হোতা’ সাজিদের ভাই বলে দাবি করে আসছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।

বর্ধমান বিস্ফোরণে বাংলাদেশের নাগরিক জড়িত থাকার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন নই: স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বর্ধমান বিস্ফোরণে বাংলাদেশে নাগরিক জড়িত বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ এখনো স্বীকার করেনি যে এরা বাংলাদেশের নাগরিক। ভারতও এ বিষয়ে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বর্ধমান বিস্ফোরণে বাংলাদেশের নাগরিক জড়িত থাকার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন নই। তবে বাংলাদেশ সরকার জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না এবং কেউ জঙ্গি দমনে সহায়তা চাইলে তাদের সহায়তা দেয়া হয়।

স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী জানান, আগামীকাল সোমবার ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএর চার সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে। তারা যে ইনফরমেশন দেবে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক কিনা, কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী এর সঙ্গে জড়িত কিনা সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। ঘটনা উদঘাটনে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’



মন্তব্য চালু নেই