সেই কন্টেইনারে মিলেছে কোকেন

ভোজ্যতেল ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা সেই কন্টেইনারের নমুনার পুনঃপরীক্ষায় তরল কোকেনের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে।

ঢাকায় দুটি পরীক্ষাগারে পৃথক পরীক্ষার পর তরল কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় বলে শনিবার জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মঈনুল খান।

বন্দরে পরীক্ষায় ওই কন্টেনারে কোকেনের প্রমাণ না মেলার পর পুলিশ তা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না। তাদের চাপেই ওই তরল পরীক্ষা করতে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।

ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়।

মঈনুল খান বলেন, “কন্টেইনারে থাকা ৯৬ নম্বর ড্রামের তরলের পরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব মিলেছে। ওই ড্রামের ১৮৫ কেজি সানফ্লাওয়ার অয়েলের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ তরল কোকেন বলে ধারণা করছি।”

সানফ্লাওয়ার অয়েল ঘোষণা দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া থেকে কন্টেইনারটি আমদানি করে চট্টগ্রামের খান জাহান আলী লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ মাসের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডে থাকা কন্টেইনারটি আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

পরদিন ৮ জুন গোয়েন্দা পুলিশ, শুল্ক গোয়েন্দা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর, নৌবাহিনী, কাস্টমসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কন্টেইনারে থাকা ভোজ্যতেলের কায়িক পরীক্ষা হয়।

প্রাথমিক পরীক্ষায় ১০৭টি তরল ড্রামের কায়িক পরীক্ষায় তরল কোকেনের নমুনা ধরা পরেনি।

ওইদিন উপস্থিত পুলিশের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী বলেছিলেন, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তারা কন্টেইনারটি শনাক্ত করেন এবং এতে কোকেন আছে বলে তাদের কাছে খবর রয়েছে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বলিভিয়া থেকে আমদানি করা সূর্যমুখী ভোজ্যতেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজীকরণ হয় উরুগুয়ের মন্টিভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে গত ১২ মে কনটেইনারটি এসে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের খান জাহান আলী লিমিটেড নামে কনটেইনারটি আমদানি করা হলেও বন্দরে আসার পর এর মালিকানা কেউ দাবি করেনি।

খান জাহান লিমিটেডের মালিক নূর মোহাম্মদ দাবি করেছেন, তার এক কর্মচারী এটি এনেছে। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

কন্টেইনার সিলগালা করার আগে আমদানিকারক খান জাহান আলী লিমিটেডের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক সোহেলকে আটক করে পুলিশ।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) তানভীর আরাফাত তখন বলেছিলেন, মালিকের অজান্তে সোহেল নিজ উদ্যোগে কনটেইনার আনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এরপর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে জানতে পারে কোনো ধরণের ঋণপত্র এবং বিল অব এন্ট্রি ছাড়াই কনটেইনারটি আনা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই