সুস্থ থাকুন কিশমিশের গুণে

বড় পুষ্টিগুণ শুধু বড় খাবারেই নয়, ছোট খাবারেও পাওয়া যায়। আকারে ছোট কিশমিশ তার একটা উদাহরণ। আপনার মুখের স্বাদ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সারাদিনের কর্মশক্তির অন্যতম উৎস হতে পারে আঙুরের শুকনা রূপ কিশমিশ। আঙুরের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ যেমন ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিংক, লৌহ, ফ্লোরাইড, পোটাসিয়াম, ফোলাট, নিয়াসিন, কোলিন, ভিটামিন বি সিক্স, সি, কে এবং রিবোফ্লাবিন কিশমিশেও পাওয়া যায়। নিজেকে সুস্থ রাখতে আপনার খাদ্যাভ্যাসে অল্প পরিমাণে যুক্ত হতে পারে সুস্বাদু কিশমিশ। পুষ্টিগুণ না জেনে অনেকেই এর স্বাদের টানে খেয়ে থাকেন, তবে আজ জেনে নেব কিশমিশে কি উপকার পেতে পারি।

প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছে- এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম, ডায়েটরি ফাইবার ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম।

মস্তিষ্কের খাদ্য

কিশমিশে থাকা বোরন মস্তিষ্কের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া বোরন মনোযোগ বৃদ্ধি, চোখের সঙ্গে হাতের সামঞ্জস্য বাড়ানো স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে। একশ গ্রাম কিশমিশ থেকে ২.২ মি.গ্রা. বোরন পাওয়া যায়।

ক্যানসার প্রতিরোধ

কিশমিশের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে। দেহে ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে। কিশমিশে আরও রয়েছে ক্যাটেচিন বা পলিফেনলিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিডও আমাদের দেহে ক্যানসার মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

বিষাক্ত পদার্থ দূর করে রক্ত শুধু পরিষ্কারই করে না, পাশাপাশি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে কিশমিশ। মূলত কিশমিশে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম শরীরে রক্তচাপ বাড়ায়। কিশমিশ শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

শক্তি বাড়ায়

কিশমিশে রয়েছে চিনি, গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ। দুর্বলতার সময়ে কিশমিশ খেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা আপনার দেহে শক্তি বাড়িয়ে দেবে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের কিশমিশ থেকে দূরে থাকাই ভালো।

দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা

চকলেট খেয়ে শিশুদের দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি হয়। তাদেরকে চকলেটের বদলে কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করালে দাঁতের সুরক্ষা হবে। কিশমিশে রয়েছে ওলিনোলিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাধা দেয়।

হাড়ের গঠন

কিশমিশে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা হাড় মজবুত করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কিশমিশে আরও রয়েছে বোরন নামক মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস। মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস হাড়ের ক্ষয় এবং বাতের ব্যথা থেকে দূরে রাখবে।

সংক্রমণে বাধা

কিশমিশের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরি উপাদান। কিশমিশ কাটা ছেঁড়া বা ক্ষত থেকে সংক্রমণে বাধা সৃষ্টি করে আপনাকে করবে সুরক্ষিত।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর

কিশমিশে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আমাদের পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

রক্ত উৎপাদন করে

প্রতি ১০০ গ্রাম কিশমিশে যে পরিমাণ লৌহ আছে, তাতে একজন মানুষের দৈনিক চাহিদার ২৩ শতাংশ পূরণ করে।



মন্তব্য চালু নেই