সুবহানের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ প্রমাণিত

আটক জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় পড়া শুরু হয়েছে।

বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ রায় পাঠ শুরু করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ১৬৫ পৃষ্ঠার রায়ের সারাংশ পাঠ করছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

রায় পাঠকালে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান জানান, সুবহানের বিরুদ্ধে আনা নয়টি অভিযোগের ছয়টি প্রমাণিত হয়েছে। প্রমাণ হওয়া অভিযোগগুলো হলো- অভিযোগ নং ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭। আর অভিযোগ নং ৫,৮, ৯ প্রমাণিত হয়নি।

রায় পাঠের আগে সুবহানকে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় আনা হয়। এর আগে বুধবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশি প্রহরায় ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহানের বিরুদ্ধে আজ বুধবার রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটির রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখে দেন।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করছে, তারা সুবহানের বিরুদ্ধে আনীত সবগুলো অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ জন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রসিকিউশন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষ দাবি করে, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের অভিযোগসমূহ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। একটি অভিযোগও তারা প্রমাণ করতে পারেনি। তিনি সসম্মানে খালাস পাবেন বলে আশা করে তারা।

গত ১৭ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আট কার্যদিবসে সুবহানের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।

এর আগে গত ৫ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ও গত বৃহস্পতিবার আট কার্যদিবসে সুবহানের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর জেয়াদ-আল-মালুম, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।

গত ৭ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুবহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুই তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও মো. নূর হোসাইনসহ রাষ্ট্রপক্ষের ৩১ জন সাক্ষী।

অন্যদিকে সুবহানের পক্ষে তিনজন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করে দিলেও কোনো সাফাই সাক্ষী হাজির করেননি আসামিপক্ষ।

গত ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-১ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করেন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ষড়যন্ত্রসহ আট ধরনের নয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সুবহানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

১৫ সেপ্টেম্বর সুবহানের বিরুদ্ধে ৮৬ পৃষ্ঠার ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা দেন প্রসিকিউশন।

২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে সুবহানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই রাতেই তাকে পাবনা কারাগারে নেওয়া হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয় সুবহানকে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশনের আবেদন আমলে নিয়ে সুবহানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।



মন্তব্য চালু নেই