সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে যানবাহন না থামানোর নির্দেশ

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে তল্লাশির নামে যানবাহন না থামানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভার সভাপতিত্বকালে আইজিপি এ নির্দেশ দেন।

সভায় আসন্ন পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে সকল ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে তৎপর থাকার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেছেন, রমজান ও ঈদ উপলক্ষে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’।

রমজানে খাদ্যে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনার ওপর জোর দিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ফরমালিন ও রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত ফল বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

এ কে এম শহীদুল হক বলেন, মাদক উদ্ধার অভিযান জোরদার করতে হবে। সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জনগণের সাথে পুলিশের দূরত্ব কমাতে হবে। তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

সভার শুরুতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. মনিরুজ্জামান পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন। সভায় পবিত্র রমজান মাসের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা, ট্রেন, বাস ও নৌপথে নিরাপদ চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা, ঈদ জামায়াতের নিরাপত্তা এবং জাল টাকার অপব্যবহার রোধ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়।

সভায় ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রেলওয়ে স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে পকেটমার ও অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় শহরে বিপণী বিতান ও শপিংমল যথাসম্ভব সিসিটিভির আওতায় এনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। জনসাধারণের কেনা-কাটার সুবিধার্থে এবং তারাবির নামাজের সময় অপরাধমূলক তৎপরতা প্রতিরোধে গভীর রাত পর্যন্ত নৈশ টহলের ব্যবস্থা করা হবে।

ব্যাংক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানে বড় অংকের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশ জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধ এবং যানজট নিরসনে হাইওয়ে এবং জেলা পুলিশ বিশেষ তৎপর থেকে দায়িত্ব পালন করবে।

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড় মনিটরিং এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় দেশের মানুষের রমজান ও ঈদ উদযাপন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি ফোর্সের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্যও কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (এডমিন অ্যান্ড অপস) মো. মোখলেসুর রহমান, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. আবুল কাশেম, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজিপি মো. সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, নৌপুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিবৃন্দ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারগণ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, আনসার এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই