সিনেমা ও নাটকে পুলিশের চরিত্র নিয়ে আসছে বিধি-নিষেধ

সিনেমা ও নাটকে পুলিশ চরিত্র দেখানোর ক্ষেত্রে পুলিশের তরফ থেকে কিছু বিধি নিষেধ জারি করার প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে প্রস্তাবনাটি তথ্য মন্ত্রণালয়ে যাবে। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয় এটি যাছাই-বাছাই করে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। যে দিন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে সেদিন থেকেই এটি কার্যকর হবে।

দায়িত্বশীল এক পুলিশ কর্মকর্তা  জানান, নাটক ও সিনেমায় পুলিশের চরিত্র দেখানোর বিষয় সংক্রান্ত প্রস্তাবনা ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে গত সপ্তাহে এ প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতীয় চলচ্চিত্রে পুলিশকে সঠিক ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে গবেষণা করা হয়। ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, মুম্বাইয়ের ছবিতে পুলিশের চরিত্র দেখানোর জন্য তারা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তারা পুলিশ চরিত্রের বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন।

যে কারণে পুলিশ চরিত্র দিয়ে ভারতীয় যে ছবিগুলো তৈরি করা হচ্ছে সেখানে পুলিশকে পুলিশের মতোই উপস্থাপন করা হচ্ছে। পুলিশকে প্রধান চরিত্র করে তৈরী করা বেশ ক’টি ভারতীয় ছবি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।’

সূত্র জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা পুলিশ সদর দপ্তরে পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে পাঠানো হয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর চলচ্চিত্র ও নাট্যপাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়।

পুলিশের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নাটক সিনেমায় পুলিশকে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে পুলিশের কাছ থেকে আগে অনুমতি নিতে হবে। এতে আরো বলা হয়েছে, বিভিন্ন নাটক ও সিনেমায় পুলিশের পোশাক পরে অভিনেতা অভিনেত্রীরা অভিনয় করেন। ক্ষেত্র বিশেষে পুলিশের পদবির সঙ্গে মিল না রেখে পোশাক পরিধান করতে দেখা যায়।

আবার নির্মাতারা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন ধরনের অনুমতি নেন না। পুলিশের পদবির বিপরীতে পোশাক ব্যবহারের জন্য সরকার অনুমোদিত একটি ‘ড্রেস রুল’ রয়েছে। ড্রেস রুল অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা নির্দিষ্ট র‌্যাঙ্ক ব্যাজ ব্যবহার করে পোশাক পরিধান করেন। এ ক্ষেত্রে পূর্বানুমতি ব্যতিত অভিনয়ের ক্ষেত্রে পুলিশের পোশাক ব্যবহার দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গের শামিল ও দণ্ডনীয় অপরাধ।

পুলিশ একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। অথচ নাটক সিনেমায় পুলিশের চরিত্রকে প্রায় সর্বদাই নেতিবাচক ও হাস্যরসের পাত্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। আবার এমন ব্যক্তিকে পুলিশের ভূমিকায় নির্বাচন করা হয় যার শারীরিক সক্ষমতা বা যোগ্যতা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের জন্ম দেয়।

এমনকি চুল বড় রেখেও পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। যাতে জনগণ ও কোমলমতি শিশুদের মনে পুলিশ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। এ ছাড়াও পুলিশ সদস্যদের মনে অসন্তোষ সৃষ্টির পাশাপাশি কর্মস্পৃহাকে ব্যাহত করে। অথচ বিভিন্ন দেশের নাটক সিনেমায় পুলিশের ভাল কর্মকাণ্ডকে জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই