গুজব নয়, সত্য

সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত গরু রাখালের লাশ অবশেষে উদ্ধার

গুজব নয়, অবশেষে সত্য হল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী সীমান্তে শনিবার ভোরে ভারতীয় বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হয়েছে বাংলাদেশি গরু রাখাল মুকুল হোসেন (৪৫)। শনিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়ে নিহত মুকুলের লাশ বিজিবি ও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। বিভিন্ন গনমাধ্যমে যখন গরু রাখাল মুকুল হোসেনের নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হচ্ছিল, তখন বিজিবির পক্ষ থেকে গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে সাতক্ষীরা-৩৮ বিজিবির অধিনায়ক নজির আহমেদ বকশি বার বার দাবি করছিল কুশখালী সীমান্তে বিএসএফ এর নির্যাতনে নিহত হওয়ার ঘটনা সত্য নয়, নিছক গুজব। বিজিবি টিভি স্কল থেকে সংবাদ উঠিয়ে নেয়ার জন্যও স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে।
অবশেষে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী সীমান্তবর্তী বাদহিলকি গ্রাম সংলঙ্গ বিল থেকে নিহত মুকুল হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন লাশের সন্ধান পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, সীমান্তের জিরোপয়েন্ট থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দুরে কুশখালি ইউনিয়নের বাদহিলকির কাছে আগাড়ের মাঠে লাশটি চাটাই দিয়ে পেচানো ছিল ।
নিহত মুকুল সদর উপজেলার হাওয়ালখালি গ্রামের মহাতাবউদ্দিনের ছেলে । শনিবার ভোরে ভারত থেকে গরু নিয়ে ফেরার সময় বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হন তিনি।পরে তার সঙ্গীরা লাশ বাংলাদেশ ভূখন্ডে এনে লুকিয়ে রাখে।
এদিকে, শনিবার সকালে তার সঙ্গী আলি হোসেন বিএসএফএর হাতে মুকুল নিহত হবার প্রচার দিয়েই গা ঢাকা দেয়। এরপর থেকে দিনভর চেষ্টা করেও পুলিশ ও বিজিবি লাশটি খুঁজে পায়নি।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) আবুল কালাম জানান, তার কাছে রাতে লাশটি দেখতে পাবার খবর আসে। তিনি দ্রুত কুশখালি ইউনিয়নের বাদহিলকি গ্রামের পাশে আগাড়ের মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করেন। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ শামসুর রহমান জানান, লাশটি চাটাই দিয়ে পেচিয়ে বাধা অবস্থায় পড়েছিল। ময়না তদন্তের জন্য মুকুলের লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি এমদাদ শেখ লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গুলি করেই মুকুল হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি বর্তমানে বন্ধ করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়। এর পরও আসন্য ঈদকে সামনে রেখে শনিবার ভোরে কুশখালী সীমান্ত দিয়ে শতাধিক গরু নিয়ে আসে জনৈক এক ক্ষামতাসীন দলের জনপ্রতিনিধি কাম ভারতীয় গরু ব্যবসায়ি। ওই গরু আনতে গিয়েই বিএসএফ এর নির্যাতনে নিহত হয়েছে মুকুল হোসেন। মুকুলের লাশ তাৎক্ষনিক ভাবে পুলিশ বা বিজিবির কাছে হস্তান্তর করলে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে নিয়ে আসা শতাধিক গরু কোরিডোর না হয়ে নিলাম হতে পারে এই আশংকয় গরু ব্যবসায়ি ও গরু রাখালরা তার লাশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর না করে লুকিয়ে রেখেছে। গুরু করিডোর সম্পন্ন হওয়ার পর রোববার গভীর রাতে ওই চক্রটি লাশের সন্ধান দেয় পুলিশকে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা -৩৮ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর নজির আহমেদ বকশি রোববার সকাল ৯ টা ২০ মিনিটে জানান, মুকুলের লাশ উদ্ধারের কোন খবর তার জানা নইে। লাশ উদ্ধারের ব্যাপারটি তাকে এখনও কেউ জানাননি। তিনি বিষয়টি খোঁজ খবর নিচ্ছেন।



মন্তব্য চালু নেই