২ পুলিশ আহত , অস্ত্র উদ্ধার

সাতক্ষীরা সীমান্তে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক যুবক গুলিবিদ্ধ

পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী নবাতকাটি গ্রামের একটি বাগানবাড়ির পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দু’ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, এক রাউণ্ড বন্দুকের গুলি ও ২০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম আজাহারুল ইসলাম (৩২)। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহ গ্রামের রহিম বক্সের ছেলে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন রফিকুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম।

এদিকে গুলিবিদ্ধ আজাহারুলের স্বজনদের দাবি, ভোমরা বন্দরের রঞ্জু এন্টারপ্রাইজের অফিস থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে সাতক্ষীরা অফিসে নিয়ে আসে। সেখানে তাকে নির্যাতনের পর দু’ চোখে কালো কাপড় বেঁধে অন্যত্র নিয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে পায়ে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) এমদাদুল হক শেখের ভাষ্য মতে, ভারত থেকে চোরাচালানিরা অবৈধপথে অস্ত্র ও মাদক সীমান্ত দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে পাচার করছে মর্মে তিনি গোপনে খবর পান। এরই ভিত্তিতে সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপপরিদর্শক অহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ও সহকারি উপপরিদর্শক লিটন বিশ্বাসের নেতৃত্বে সদর উপজেলার ভোমরা- সাতক্ষীরা সড়কের নবাতকাটি এলাকায় মিঠু খানের বাগান বাড়ির পাশে ওঁৎ পেতে থাকে। রাত ৯টার দিকে ওই স্থান দিয়ে ৭/৮ জনের একদল পাচারকারি সাতক্ষীরার দিকে আসার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছোঁড়ে।

পুলিশ পাল্টা সাত রাউণ্ড গুলি ছোঁড়ে। ১০/১২ মিনিট বন্দুকযুদ্ধের পর অন্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে আজাহারুল ইসলাম নামের এক অস্ত্র ও মাদক পাচারকারিকে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি ওয়ান শুটার গান, এক রাউণ্ড বন্দুকের গুলি ও ২০ বোতল ফেনসিডিল। বন্দুকযুদ্ধে শরিফুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম নামের দু’ সিপাহী আহত হয়। গুলিবিদ্ধ পাচারকারিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওযা হয় ওই দু’ পুলিশ সদস্যকে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো জানান, আজহারুল একজন পেশাদার অস্ত্র ও মাদক চোরাকারবারী । তার বিরুদ্ধে সদর থানায় ছয়টি চোরাচালান মামলা রয়েছে ।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ পরিমল কুমার বিশ্বাস জানান, আজহারুলের বাম পায়ের হাঁটুর নীচে গুলি লেগেছে। তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গুলিবিদ্ধ আজাহারুলের স্ত্রী ঊর্মি খাতুনের অভিযোগ, তার স্বামী আজাহারুল ভোমরা সিএণ্ডএফ এজেন্ট রঞ্জু এন্টারপ্রাইজের কর্মী। সোমবার বিকেল তিনটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে অফিসে যায় ।

বিকেল চারটার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অফিসে নিয়ে নির্যাতনের সময় ভগ্নিপতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোর্শেদুল হকের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করে কোটিপতি বানিয়ে দেওয়াসহ আপত্তিকর কথা বলা হয়। সেখান থেকে চোখে কালো কাপড় বেঁধে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাম পায়ের হাঁটুর নীচে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে পুলিশ গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে।

সাতক্ষীরা সদর থানার সহকারি উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন জানান ন্সরকারি কাজে বাধা, অস্ত্র ও ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় সহকারি উপপরিদর্শক লিটন বিশ্বাস বাদি হয়ে মঙ্গলবার সকালে আজাহারুল ইসলামের নাম উলে¬খ করে অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ও ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই