সাতক্ষীরায় আমের বাম্পার ফল হবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা

সাতক্ষীরায় এবার আমের বাম্পার ফল হবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয়। তাহলে আমের ফলন হবে সন্তোষ জনক। ইতোমধ্যেই জেলার আমগাছ গুলোতে মুকুলে ভরপুর হয়েগেছে। সার্বিক বিষয়ে তদারকি করে জেলা কৃষি অফিস জেলায় এবার আম উৎপাদনের সম্ভব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। আমের বাম্পার ফলনের আশায় বুক বাঁধছেন আমবাগান মালিকরা। এরই মধ্যে গাছে গাছে মুকুলের সমারোহে মৌ মৌ গন্ধে মধু সংগ্রহ নেমেছে মৌমাছি। সোনালি-হলুদের মিশ্রণে অপরূপে সেজেছে সাতক্ষীরা জেলার আমের বাগান।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুম আমের মুকুলের জন্য অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। গত বছরের চেয়ে এবার আমের উৎপাদন ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষিবিদ ও আম চাষিরা।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, প্রায় ৩৬০১ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে যা থেকে এবার আম উৎপাদনের সম্ভব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৮৫ হেক্টর জমিতে,তালা উপজেলায় ৬৩ হেক্টর জমিতে,করারোয়ায় ২৭৫ হেক্টর জমিতে,দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৬ হেক্টর জমিতে,কালিগঞ্জ উপজেলায ৮৯০ হেক্টর জমিতে,আশাশুনি উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে,শ্যামনগর উপজেলায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে জেলায় ৩৬০১ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এ বিশাল পরিসরের বাগান থেকে উৎপাদিত আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার ধানের জমিতে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার আমবাগান। ফলে এ অঞ্চলে আম চাষে নীরব বিপ্লব ঘটেছে।

সাতক্ষীরায় বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়ে তাকে তার মধ্যে হিমসাগর,ন্যাংরা গেবিন্দভোগ,আ¤্রপলি,বোম্বায়,লতাআম বেশি চাষ করা হয়। সাতক্ষীরার এ আম রাজধানী ঢাকাসহ দেশেÑবিদেশে পরিচিতি লাভ করেছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষ এখন বরেন্দ্র এলাকায় জমি কিনে বানাচ্ছেন আমবাগান এবং শ্রমিক দিয়ে সারা বছর পরিচর্যা করছেন বাগানের। এতে বহু বেকার লোকের কর্মসংস্থান ঘটেছে। হিমসাগর আর ন্যাংরা আমের রাজধানী সাতক্ষীরার মানুষ বহুকাল ধরেই আম চাষে জড়িত। দেশের জন্য আম একটি মৌসুমি ফল হলেও সাতক্ষীরা জেলা এটি প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে পরিণত হয়েছে। এ খাতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। গাছের পরিচর্যা থেকে আম কেনাবেচা পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে সাতক্ষীরা অঞ্চলে। এদিকে গাছে গাছে মুকুলের সমারোহে আমবাগান হাতবদল হতে শুরু করেছে। আমের মুকুল বেশি হওয়ায় এবার বেশি দামে বাগান বিক্রি হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আমের ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলায় বাগান কিনতে শুরু করেছেন। গতবারের চেয়ে এবার ব্যবসায়ীরা বেশি আসছেন। সাতক্ষীরার আম ব্যবসায়ীরা জানান, মুকুলের ওপর ভিত্তি করেই বাগান কেনাবেচা হয়ে থাকে। এবার আমের মুকুল বেশি হওয়ায় বাগানের দামও বেশি।



মন্তব্য চালু নেই