সাগরপাড়ে কে এই রহস্যময় নারী?
কলাপাড়া (পটুয়াখালী): বেশভুষা দেখে অভিজাত পরিবারের বলেই মনে হয়। কুয়াকাটার সাগর সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন অন্য পর্যটকদের মতোই। তবে গন্তব্য যেন ছিল অজানা। মধ্যবয়স্ক নারীটির মুখে কোনো কথাও ছিল না। নীরবে তাকিয়ে ছিলেন দূর সাগরের দিকে। সঙ্গে ছিলও না কেউ। ঘুরছিলেন এলোমেলো উদ্দেশ্যবিহীন।
নারীটির এ বেখেয়ালিপনা শনিবার সকালে প্রথম চোখে পড়ে ছাতা ব্যবসায়ীদের। তারা কয়েকজন মিলে তার সামনে গিয়ে নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে শত প্রশ্নেও তার মুখ খুলতে পারেনি তারা। তাই খবর দেয়া হয় টুরিস্ট পুলিশকে।
টুরিস্ট পুলিশ গিয়ে যথারীতি তাদের মতো করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ। ধারণা করা হচ্ছিল নারীটি বাকপ্রতিবন্ধী। তবে সাংবাদিকরা তাকে প্রতিবন্ধী হিসেবে মানতে নারাজ। কারণ ছবি তুলতে গেলে বার বার প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিলেন তিনি। হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলেন।
অবশেষে দুপুরে নারীটিকে সোপর্দ করা হয় কলাপাড়া জুডিশিয়াল আদালতে। বিজ্ঞ আদালত পরিচয়হীন ওই নারীকে জিজ্ঞসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে তার নাম লিখতে বলা হয় কাগজে। কিন্তু ওই নারী অনেকগুলো নাম লেখেন। তার মধ্য থেকে কোনটি তার নাম তা বের করতে হিমশিম খেতে হয়েছে সবাইকে। কোনো রকম নাম পরিচয় উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় সেফহোমে।
স্থানীয়রা জানান, নারীটির গতিবিধি রহস্যজনক। কখনও মনে হয় প্রতারিত ও আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কিংবা কোনো পাচারকারী বা অপরাধীদের হাত থেকে উদ্ধার হয়ে দিকহারা হয়ে পড়েছেন। হয়তো কিছুদিন গেলে নিজে নিজেই সব বলতে পারবেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ ইনচার্জ ফসিউর রহমান জানানন, পরিচয়হীন ওই নারীর কাছে পরিচয় জানতে চেয়ে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তারা সকালে তাকে কলাপাড়া থানায় পাঠানো হয়।
কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) মনিরুজ্জামান জানান, জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই নারীর কোনো পরিচয় উদ্ধার করা যায়নি। তাই তাকে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। বিজ্ঞ আদালত তার কাছ থেকে কোনো জবাব না পেয়ে সেফ হোমে পাঠিয়ে দেয় হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই