সহিংসতায় ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ প্রশ্নবিদ্ধ : বিজিএমইএ

চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তৈরি পোশাক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় বাংলাদেশ ইমেজ সংকটে পড়েছে। যার কারণে আন্তর্জাতিক ব্যবসা হারানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে সংকটে পড়তে যাচ্ছি আমরা। ক্রেতাদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হলেও তারা বলছে আগে বাংলাদেশের সহিংসতা পরিহার করুন।

বুধবার দুপুরে বিজিএমইএ কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। পোশাক প্রস্তুত রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিট ম্যানুফ্যাকচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকিএমইএ) এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল ম্যানুফ্যাকচার অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) মানববন্ধনের আয়োজন করে। দেশের চলমান হরতাল-অবরোধসহ রাজনৈতিক সকল প্রকার সহিংসতার প্রতিবাদে অর্ধ শতাধিক শ্রমিক সংগঠন একাত্মতা পোষণ করে এ মানববন্ধনে অংশ নেয়।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ক্রিসমাস শেষ হওয়ার পর বছরের শুরুতে নতুন নতুন রপ্তানির অর্ডারের সময় হলেও ক্রেতারা অর্ডার দেওয়ার জন্য এদেশে আসতে পারছে না। দিনের পর দিন অবরোধ-হরতাল দিয়ে দেশকে স্থবির করে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পোশাক শিল্পে ৩০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে।

এর আগে সারা দেশে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং হতাহতদের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া প্রার্থনা করা হয়।

আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতায় পোশাক শিল্পের সমগ্র সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়ছে। রাজনীতিবিদদের কাছে ব্যবসায়ীরা আজ জিম্মি। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ২০১৩ সালের মতো আবারো ক্রেতাদের মধ্যে অনিশ্চিয়তা সৃষ্টি হবে। ফলশ্রুতিতে এই শিল্প অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমনটি ঘটেছিলো শ্রীলঙ্কায়।

তিনি আরো বলেন, এসময় আমাদের এখানে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করার কথা না। যার যার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে সমস্ত অর্থনীতি আজ হুমকির মুখে। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি : শিল্পে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ দিন। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। সহিংসতা বন্ধের ব্যবস্থা করুন। এমন পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধান করুন। তা না হলে আমরা রাস্তায় নামবো। আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না।

মানববন্ধন হোটেল সোনারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার রেলগেট পর্যন্ত পৌঁছেছে। এতে একাত্মতা পোষণ করে অংশগ্রহণ করেছে বিভিন্ন রপ্তানিকারকদের সংগঠন, ব্যবসায়ীক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, পরিবহণ সংগঠন, মালিক সংগঠন, বিমা কোম্পানিসহ অর্ধ শতাধিক সংগঠন।

সংগঠনগুলোর নেতাদের একটাই দাবি, চলমান সহিংসতা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে অর্থনৈতিকভাবে এদেশ ভেঙে পড়বে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর প্রাক্তন সভাপতি আব্দুস সালাম মোর্শেদী, সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দীন চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা তপন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দীন প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই