সস্তা কলমী শাকের দামি পুষ্টিগুণ
গ্রীষ্ম থেকে শুরু হয়ে বর্ষাকালের শেষ পর্যন্ত সুলভ মূল্যে বাজারে পুষ্টিকর দেশীয় কলমী শাক পাওয়া যায়। এ শাক আমাদের দেশে পুকুর, নদী, ডোবা, হাওর ও খাল-বিলে অযত্ন অবহেলায় আপনি জন্মে। পুষ্টিমান বিবেচনায় এনে সুস্বাদু কলমী শাকের ব্যাপক চাহিদাকে প্রাধান্য দিতে বানিজ্যিক হারে এর চাষ হচ্ছে। প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ভরপুর কলমী শাক। খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম দেশীয় কলমী শাকে ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৯.৪ গ্রাম শর্করা, ০.১ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ০.১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফেভিন), ৪২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১০৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ, ১০৭৪০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ৪৬ কিলো ক্যালোরি খাদ্যশক্তি থাকে।
হেলেঞ্চা, থানকুনি, কচুশাক (কালো) ও পুঁইশাকের চেয়ে কলমী শাকে ভিটামিন বি-১-এর (থায়ামিন) পরিমাণ রয়েছে অনেক বেশি। এছাড়াও কলমী শাকে রয়েছে আরও অনেক গুণ, আসুন জেনে নেয়া যাক।
* কলমী শাকে থাকা ভিটামিন বি-১ (থায়মিন), স্নায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখে। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে।
* দেশীয় কলমী শাকে অধিক পরিমাণে ক্যারোটিন থাকে। এ ক্যারোটিন থেকে আমাদের দেহে ভিটামিন ‘এ’ সৃষ্টি হয়। চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ভিটামিন ‘এ’- কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
* কলমী শাকে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ আমাদের দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করে। এছাড়া ভিটামিন ‘সি’ সর্দি-কাশি ও ঠাণ্ডার হাত থেকে রক্ষা করে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
* কলমী শাকে উপস্থিত ক্যালসিয়াম মানবদেহের হাড় ও দাঁত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য দেশীয় কলমী শাক অত্যন্ত উপকারী শাক।
* কলমী শাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে। খাদ্যআঁশ খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাক প্রক্রিয়ার কাজে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কলমী শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।
* কলমী শাকের রস ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে সকাল ও বিকেলে দু’বার খেলে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
* কলমী শাকের রস দু’চামচ একটু গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
মন্তব্য চালু নেই