সরকার জনগণকে আইওয়াশ করার চেষ্টা করছে

মুরতাদ, নাস্তিক লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে আওয়ামী সরকার জনগণকে আইওয়াশ করার চেষ্টা করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যপারেও সরকার চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। বর্তমানে দেশ লতিফ ইস্যুতে ফুসে উঠেছে। লতিফ সিদ্দিকীকে যদি আইনের আওতায় আনা না হয় তাহলে সরকারকে চরম খেসারত দিতে হবে। তাকে নিয়ে সরকারের দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নাস্তিক লতিফকে নিয়ে সরকার যে নাটক সাজিয়েছে তা এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ কখনই মেনে নেবে না। ১৯ অক্টোবর,  শনিবার বিডি নিউজ টাইম ডটকম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী এ সব কথা ব্যক্ত করেন।

সাক্ষাৎকারটি সারসংবাদ আওয়ার নিউজ বিডির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো :

প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?
মুজিবুর রহমান হামিদী : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি।

 

প্রশ্ন : খেলাফত আন্দোলন সম্পর্কে কিছু বলুন?
মুজিবুর রহমান হামিদী : হযরত মাওঃ মুহাম্মদুল্লাহ হাফিজ্জী হুজুর (রহঃ) এর প্রতিষ্ঠিত খেলাফত আন্দোলন বাংলার জমিনে ইসলাম ও ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এ সংগঠন দেশের প্রতিটি মানুষের দ্বারে দ্বীন ধর্ম ইসলামের দাওয়াত পৌছে দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে এই খেলাফত আন্দোলন বলিষ্ঠ ও যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। আশা করি ইনশা-আল্লাহ একদিন বাংলার জমিনে ইসলাম কায়েম হবে।

 

প্রশ্ন : বর্তমানে লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে আপনাদের কোনো কর্মসূচী আছে কি?
মুজিবুর রহমান হামিদী : সুন্দর একটি প্রশ্ন করেছেন। শুধু লতিফ সিদ্দিকী নয়, যারা ধর্মের উপর, দ্বীনের উপর আক্রমন করে, দ্বীন ইসলামকে নিশ্চিন্ন করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে সর্ব প্রথমই বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে। আপনারা জানেন সেই শাহবাগে নাস্তিক ব্লগাররা আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ) সম্পর্কে যখন কুটুক্তি করে তখন সর্বপ্রথম এই খেলাফত আন্দোলনই ঢাকাতে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল সমাবেশ করে। যার ফলে সারাদেশে এক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল।
লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচীর ব্যাপারে ভাবছি। শীঘ্রই কেন্দ্র থেকে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। তাছাড়া লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে বায়তুল মোকারমের সামনে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ সহ আমরা নানা কর্মসূচী পালন করেছি।

 

প্রশ্ন :  সমমনা কিছু ইসলামিক দলের ২৬ অক্টোবরের হরতাল সম্পর্কে কিছু বলেন?
মুজিবুর রহমান হামিদী : আমরা সহ সমমনা কিছু ইসলামিক দল আগামী ২৬ অক্টোবর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচী দিয়েছি। এই হরতাল কর্মসূচী সফল করে তোলার জন্য দেশবাসীকে আহবান জানায়।

 

প্রশ্ন :  হরতাল সহ এ সব নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে লতিফ সিদ্দিকীকে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনা সম্ভব বলে কি মনে করেন?
মুজিবুর রহমান হামিদী : মুরতাদ, নাস্তিক লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে আওয়ামী সরকার জনগণকে আইওয়াশ করার চেষ্টা করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যপারেও সরকার চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা বলিষ্ঠকণ্ঠে বলতে চাই, লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে নাটক করা বাদ দিয়ে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আর সেই শাস্তি হবে ফাঁসি। তা না হলে সরকারকে এর জন্য চরম খেসারত দিতে হবে।

 

প্রশ্ন : বিএনপি সহ অনেকেই বলছে বর্তমান সরকার ইসলাম বিদ্বেষী ও অবৈধ সরকার। তবে এ ব্যাপারে আপনাদের মন্তব্য কী?
মুজিবুর রহমান হামিদী : এ সরকারের ক্ষেত্রে সব কয়টি কথাই প্রয়োজ্য। একটা কথা বলি- যদি কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তখন তাকে বিচারের আওতায় আনা হয়। যেমন একটি ঘটনা বলি, একবার ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিজনক/অসম্মানজনক স্টাটাস দেওয়ায় তাকে তখন ৭ বছরের জেল দেওয়া হয়েছিল। তো যদি দেশের একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কুটুক্তি করার কারণে ৭ বছরের জেল হতে পারে, তাহলে আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ)কে নিয়ে কট্টাক্ত করবে তাদের শুধু দল থেকে বহিষ্কার করবে এটা দেশবাসী কখনই মেনে নিতে পারে না। আপনারা জানেন যে, এ সরকারের আমলেই যারা ইসলাম ও মহানবীকে অবমাননা করেছে এমন ১০০জন বক্তির তালিকা নিয়ে খেলাফত আন্দোলন কিছুদিন আগে একটা পুস্তিকা বের করেছে। এ সরকার আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাসকে সংবিধান থেকে তুলে দিয়ে নাস্তিকদের উস্কে দিয়েছেন।

 

প্রশ্ন : দ্বীনি দাওয়াত প্রচার প্রসারে বর্তমানে দেশে কেমন সময় বিরাজ করছে বলে মনে করেন?
মুজিবুর রহমান হামিদী : শতকরা ৯০/৯২জন মুসলমানের দেশে আমরা বসবাস করি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এ দেশে অন্য ধর্মের লোকেরা যেভাবে স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম কর্মের কাজ করতে পারে আমরা সেভাবে পারি না। গত সপ্তাহে একটি জাতীয় দৈনিকে পড়লাম, এখন অনেক মুসলমানরা ধর্মকর্ম পালন করে কিন্তু লেবাস মানে না। তার কারণ হচ্ছে, যদি কেউ কারও মাথায় টুপি, মুখে দাঁড়ি বা পায়জামা পাঞ্জাবী দেখে তাহলে তাকে জঙ্গি বলে আটকায়। এবং পরবর্তীকালে এক সময়ে তাদেরকে মিডিয়ার সামনে জোরপূর্বক জঙ্গি বলে চাপিয়ে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে এ দেশে ইসলাম প্রচার প্রসারে অনেক বাঁধার সম্মুখিন হচ্ছে।

 

প্রশ্ন : আপনার যদি কোনো অব্যক্ত কথা থাকে তবে বলুন?
মুজিবুর রহমান হামিদী : আমি এদেশের মিডিয়া সমাজকে বলতে চাই, আপনারা সত্য, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করুন। জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিন।

 
প্রশ্ন : আপনার মূলবান সময় নষ্ট করে দীর্ঘক্ষণ আমাদেরকে সময় দেওয়া জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মুজিবুর রহমান হামিদী : আপনাদেরও ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফিজ।



মন্তব্য চালু নেই