সবচেয়ে মোটা নারীর খেতাব হারালেন ইমান

বিশ্বের সবচেয়ে মোটা নারীর খেতাব হারালেন ইমান আহমেদ আব্দ আল আতি। মিসরীয় এই নারী গত ১১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসার জন্য ভারতে পৌঁছান। সেখানেই তার প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে।

ভারতের মুম্বাইয়ে পৌঁছানোর তিন সপ্তাহের মধ্যে ইতোমধ্যে হারিয়েছেন ১০০ কেজি ওজন; বর্তমানে তার ওজন ৩৮০ কেজিতে নেমে এসেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

গত ২৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম বিছানা থেকে উঠে বসতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। শিগগিরই তিনি হাঁটতে সক্ষম হবেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসক। এছাড়া সার্জারির জন্য প্রস্তুত রয়েছেন এমান।

মিসরের এই নারীর ওজন কমিয়ে যাওয়া শুধু একটি সফলতার গল্প নয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ২৫ দিনে ৫০ কেজি ওজন কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন। এজন্য দিনে দুই কেজি ওজন কমানোর প্রয়োজন ছিল তার। কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হলো, এমান ওই সময়ে ওজন হারিয়েছেন অন্তত ১০০ কেজি; যা নির্ধারিত লক্ষ্যের দ্বিগুণ।

সার্জন মুফাজ্জল লাকদাওয়ালা বলেন, আমরা মনে করেছিলাম সে ৫০ কেজি ওজন হারিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আমরা দেখেছি সে দ্বিগুণ ওজন হারিয়েছে। শিগগিরই তার সার্জারি সম্পন্ন হবে।

এর আগে চিকিৎসার জন্য ভারতীয় ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। ৩৬ বছর বয়সী ইমান মিসরের বন্দর শহর আলেকজান্দ্রিয়ায় থাকেন। চিকিৎসার জন্য ভারতে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। কায়রোয় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা প্রথমে ওই নারীকে ভিসা দিতে অস্বীকার জানায়।

পরে মুম্বাইয়ের চিকিৎসক মুফাজ্জল লকদাওয়ালার কাছে ভিসা পেতে সহায়তা চান ইমান। ভারতীয় এই চিকিৎসক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুষমার হস্তক্ষেপে ভারতীয় ভিসা পান ইমান। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ হাসপাতালে একটি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করছেন। টুইটারে তিনি দ্রুত ওই নারীকে সহায়তার আশ্বাস দেন।

মুম্বাইয়ের চিকিৎসক মুফাজ্জল লকদাওয়ালার এর আগে মন্ত্রী নিতিন গাদকারি ও ভেঙ্কাইয়া নাইডুর ওজন কমাতে সার্জারিতে অংশ নিয়েছিলেন।

ইমানের পরিবার বলছে, জন্মের সময় ওজন ৫ কেজি ছিল। ১১ বছর বয়সের সময় থেকে তার শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। যে কারণে ছোটবেলা থেকেই সে হাঁটতে পারছিল না; হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করতো।

বিশেষ একটি বিছানায় শুয়ে ইজিপ্ট এয়ারের বিমানে করে তিনি মিশরের আলকেজান্দ্রিয়া থেকে ভারতে এসে পৌঁছেছেন। প্রথমে একটি ট্রাকে করে তাকে হাসপাতালে আনা হয় এবং পরে ক্রেনের সাহায্যে পুরো বিছানাটিকেই হাসপাতালে তোলা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে স্থুলকায় এই নারীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ একটি ঘর। চিকিৎসকরা বলছেন, মিসর থেকে তাকে ভারতে নিয়ে আসাই ছিলো প্রথম চ্যালেঞ্জ এবং এই কাজে তারা সফল হয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই