সংবর্ধনা নিতে এসে কাঁদলেন বাসেত মজুমদার

বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার নিজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে বাবার কথা স্মরণ করে কাঁদলেন। সেই সঙ্গে উপস্থিত আইনজীবীদেরকেও কাঁদালেন।

বক্তব্য দিতে গিয়ে আবদুল বাসেত মজুমদার জানান, ঢাকাতে পড়ালেখা শেষে তিনি একটি চাকরিতে চট্টগ্রামে যোগদান করেন, এ কথা শুনে তার বাবা তাকে শাসন করে বলেছিলেন- ‘বাসেত তোমাকে অনেক কষ্ট করে আমি ওকালতি পড়িয়েছি চাকরির জন্য? তুমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ওকালতি পেশায় যাও।’ বাবা বলেছিলেন- ‘আমার ছয় মেয়ের মধ্যে তুমি একমাত্র ছেলে, আমি তোমাকে অনেক আশা নিয়ে আইনে পড়ালেখা শিখিয়েছি। আর তুমি আমার আশা পূরণ করবে না?’

তখন বাসেত মজুমদার বাবার কথায় মনোযোগ দিয়ে সুপ্রিমকোর্টে আসেন আইনী পেশায়। সবাইকে তাক লাগিয়ে তিনি এখন একজন কিংবতন্তী আইনজীবী। আইনজীবীদের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের একাধিকবার নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান। আইনী পেশায় তিনি ৫০ বছর পার করেছেন।

এ কথাগুলো মনে করে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে বাবার অনুপ্রেরণা ও শাসনের কথা মনে করে অঝোরে কাঁদলেন তিনি। তার কান্নায় অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেককেই চোখের জল মুছতেও দেখা যায়।

আবদুল বাসেত মজুমদার বললেন, তিনি তার বাকী জীবন আইনী পেশায় থেকে সবাইকে সহযোগিতা করতে চান। আইনী পেশাকে ব্যবসা নয় সেবা হিসেবে সকলের কাছে উপস্থাপন করতে চান।

বাসেত মজুমদার বলেন, ‘ওকালতিকে ব্যবসা হিসেবে নয় বরং মানুষের সেবা করার উপায় হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমার নেত্রী শেখ হাসিনাকেও বলেছি- আমি মানুষের সেবা করতে চাই। তিনি আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন।’

গরীবের আইনজীবী হিসেবে খ্যাত আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, ‘জীবনের প্রথম যে মক্কেল পেয়েছি, তাকে আজও পাই। তার উত্তরাধিকারকে পাই। এটাই আমার আনন্দ।’

মজুমদার বলেন, ‘বার কাউন্সিলের এবারের নির্বাচন ছিল একটি অভূতপূর্ব ও ব্যতিক্রমী নির্বাচন। এই নির্বাচনে কমন শত্রুদের বিরুদ্ধেও লড়েছি। আবার আমাদের ইন্টারন্যাশনাল শত্রুদের বিরুদ্ধেও লড়েছি। আমি আইনজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি।’ বাসেত মজুমদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভবিষ্যতে আইনজীবীদের সমাবেশে বৃহত্তর পরিসরে সংবর্ধনা দেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বার কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, দেশীয় সাংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গৌরাঙ্গ চন্দ্র কর, ড. বশির আহমেদ, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি মোস্তাক আহমেদ ভাসানী, অ্যাডভোকেট শামসুল হক দুদু প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই