শুধু গ্রেড নয়, এবার জানা যাবে নম্বরও

এখন থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করলে পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরও জানতে পারবে। শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে প্রাপ্ত নম্বরপত্র দিতে হবে মর্মে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের একটি পূর্ণাঙ্গ কপিও প্রকাশিত হয়েছে।

কিছুদিন আগে এইচএসসি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর জানতে চেয়ে একটি রিট আবেদন করেন নাফিস সালমান খান নামের এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার নাফিসের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ রায় দেয়া হয়। শুনানিতে নাফিসের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ কে এম সালাহউদ্দিন খান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

আবেদনকারী নাফিস সালমান খানের নম্বরপত্র রিটের রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেইসঙ্গে এরপর থেকে কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে দিতে হবে মর্মে রায় দেন হাইকোর্ট।

আগে তিনটি শ্রেণীতে প্রাপ্ত নম্বরসহ ফলাফল প্রকাশ করা হলেও ২০০১ সালের ১২ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন পদ্ধতি চালু করে। তাতে বলা হয়, ‘সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল লেটার গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ২০০১ সালের অনুষ্ঠেয় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ও ২০০৩ সালে অনুষ্ঠেয় উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা থেকে ফলাফল লেটার গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশিত হবে।’

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়- ‘পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কোনো বিভাগ থাকবে না। শুধু প্রতি বিষয়ে প্রাপ্ত লেটার গ্রেড ও সব বিষয়ে প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্টের (জিপি) ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীর গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (জিপিএ) উল্লেখিত থাকবে। লেটার মার্ক ও স্টার মার্ক ও মেধা তালিকা প্রণয়ন বা প্রকাশের প্রচলিত প্রথা থাকবে না।’

এ প্রথা অনুসরণ করে পরীক্ষা চলে আসছিল। কিন্তু ২০১০ সালে সরকারি কবি নজরুল কলেজের এইচএসসি (বিজ্ঞান) পরীক্ষার্থী নাফিস সালমান খান ফলাফল পুন‍ঃনিরীক্ষণের আবেদন করেন। কিন্তু দেখা যায় এতে শিক্ষাবোর্ড কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি সে আবার ফলাফলের নম্বরপত্র চেয়ে আবেদন করার পরেও তাকে সেটি দেয়া হয়নি। এরপর ২০১১ সালে হাইকোর্টে ২০০১ সালের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন নাফিস সালমান।

এ রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে নাফিস সালমানকে ৩০ দিনের মধ্যে নম্বরপত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়াও যদি কেউ নম্বরপত্রের জন্য আবেদন করেন তবে তাকে সেটি বোর্ডকে দিতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই