শুক্রবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড!

আগুন ঝরা আবহাওয়ায় তেঁতে উঠেছে রাজশাহী। সূর্যের দহনে নগরবাসীর নাভিশ্বাস অবস্থা। একটু শীতল পরশের জন্য সেকি হাহাকার মানুষের। বৈশাখ মাস যত গড়াচ্ছে তাপমাত্রা ততই বাড়ছে। সারাদিন সূর্যের তীর্যক রশ্মী আর লু হাওয়া, রাতে গরমে অস্থির সময়। তাই তো এক পশলা বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মত আকাশের দিকে চেয়ে রয়েছে পদ্মা পাড়ের মানুষগুলো।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নগরীর মসজিদে মসজিদে বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাতে এমনই আকুতি ছিল মানুষের।

এদিকে, শুক্রবার চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া বিভাগ। এদিন আবহাওয়া বিভাগ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।

এ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাষ্য, নগরীতে শুক্রবার সকাল থেকেই গা পুড়ে যাওয়া রোদ। বৃষ্টির তো দেখাই নেই বহুদিন। বৃষ্টির অভাবে রাস্তা-ঘাট, নগর বন্দর থেকে বাসা বাড়ি কোথাও স্বস্তি নেই।

তাই তো জুমার নামাজ শেষে দুই হাত তুলে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন তারা।

অব্যাহত তাপমাত্রা প্রতিদিন রেকর্ড ভাঙছে। ফলে তীব্র দহনে পুড়ছে বরন্দ্রে মাটি। এর আগে রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বুধবার (২৩ এপ্রিল) রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর আগে ২০০০ সালে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারও অনেক আগে ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ ডিগ্রি।

তবে এর মধ্যে ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তবে এবার সে রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কা নেই মনে করছে আবহাওয়া বিভাগ।

ঢাকার আবহাওয়া অধিদফতরের বরাত দিয়ে রাজশাহী অফিসের সহকারী আবহাওয়া কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বালানিউজকে জানান, এবার রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কা কম। আগামী ২৭ এপ্রিলের পর সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

তখন তাপমাত্রা কমে আসবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তবে ২৭ এপ্রিলের আগে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, সূর্যের তাপে শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া শিশু আর বৃদ্ধদের সমস্যাই এতে বেশি।

এ ছাড়া তাপপ্রবাহে রাজশাহীর খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের সীমা চরমে পৌঁছেছে। অসহনীয় গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রকোপ বেড়েছে বিভিন্ন রোগের। শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গাছে আমের গুটি ও লিচু শুকিয়ে ঝড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তীর্ণ সবুজ ফসলের মাঠ বিবর্ণ আকার ধারণ করেছে। তবে সোমবারের মধ্যে একপশলা বৃষ্টির দেখা মিললে এ সংকট কেটে যাবে। আসবে স্বস্তি।



মন্তব্য চালু নেই