শিল্পপতির ‘আত্মহত্যা’: জমি বিক্রিতে বাধা ছিলেন স্ত্রী

একের পর এক জমি বিক্রি করে দিচ্ছিলেন আফসার গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি আব্দুর রব। এ নিয়ে স্ত্রীর রুখসানা পারভীনের সঙ্গে তার বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করেই বাবা-মা নিহত হয়ে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন এই দম্পতির ছোট ছেলে নাজিব আমেদ।

মঙ্গলবার বনানী ডিওএইচএসের বাসায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।

সোমবার রাতে বনানী ডিওএইচএসে নিজ বাসায় এই দম্পতির গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিল্পপতি আব্দুর রবের মাথা এবং তার স্ত্রী রুখসানার বুক গুলিবিদ্ধ ছিল।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের লাশ বুঝে নেয় পরিবারের সদস্যরা। পরে তাদেরকে নেয়া হয় ডিওএইচএসের নিজ বাসায়। বাদ আসর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

অন্যদিকে পুলিশ এখনো এই দম্পতির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পারেনি। তবে তারা সব বিষয় নিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার লুৎফুল কবির।

এই দম্পতির ছোট ছেলে নাজিব আমেদ জানান, তারা তিন ভাই ও এক বোন। বড়ভাই হাফিজ আহমেদের আর্ত হয় মাত্র ৫ থেকে ৬ দিন আগে। ঘটনার দিন মঙ্গলবার তিনি নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজারে হানিমুনে ছিলেন। আজ সকালে ঢাকায় ফিরেছেন তারা।

মেঝ ভাই নাইম আহমেদসহ তারা তিন ভাই গুলশানে দাদীর বাসায় থাকতেন। একমাত্র বোন ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রী চাঁদনী থাকতো বাবা-মায়ের সঙ্গে ডিওএইচএসের এ বাসায়।

তিনি আরো জানান, তার বাবা অসম্ভব বদরাগী ছিলেন। এর আগেও তিনি পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়েন। তার বাবার সঙ্গে ফুফুদের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় আব্দুর রবের বড়ভাই হাজী আফতার উদ্দিন মারা যান।

তার পরিবারের আশঙ্কা, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হয়তো আব্দুর রব হতাশায় ভুগছিলেন। তাই একের পর এক জমি বিক্রি করে দিচ্ছিলেন তিনি। এতে বাধ সাধেন তার স্ত্রী রুখসানা। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি স্বামীকে জমি বিক্রি করতে নিষেধ করতেন। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। এর জের ধরেই বদরাগী আব্দুর রব স্ত্রীকে খুন করে নিজেই আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা পরিবারের।

এদিকে পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার লুৎফুল কবির জানান, এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। সত্যিই কি আব্দুর রব আগে স্ত্রীকে খুন করে নিজে আত্মঘাতি হয়েছেন, নাকি ঘটনা অন্যকিছু তা জানতে ফরেনসিক রিপোর্টের ওপর নির্ভর করতে হবে।

তিনিও নিহত পরিবারে বরাত দিয়ে জানান, পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান পুলিশের এ উপ-কমিশনার।



মন্তব্য চালু নেই