শিথিল হচ্ছে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির যোগ্যতা!

শতভাগ যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোর নিয়মই গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের জন্য। কারণ নতুন নিয়ম অনুযায়ী ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ‘খ’ ইউনিটের মাত্র দু’জন পরীক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নতুন নিয়মানুযায়ী ‍পাস করা ওই দুজন শিক্ষার্থী চাইলে অন্য বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। সে ক্ষেত্রে বিভাগটি সম্পূর্ণ ফাঁকা থাকার আশঙ্কা রয়েছে। আর এ আশঙ্কা থেকেই ইংরেজি বিভাগে ভর্তির যোগ্যতা শিথিল করার জন্য আলোচনা চলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে। বিভাগের পক্ষ থেকে শর্ত শিথিলের একটি প্রস্তাবও ইতোমধ্যে ‘খ’ ইউনিট ভর্তি কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে নতুন নিয়মানুযায়ী ‘খ’ ইউনিটের প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২ হাজার ২২১ আসনের বিপরীতে ৪০ হাজার ৫৬৫ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ফেল করেছে ৩৫ হাজার ২৮০ জন। এদের মধ্যে শুধু ইংরেজিতেই ফেল করেছে ২২ হাজারের অধিক।

এ বছরই প্রথমবারের মতো ‘খ’ ইউনিট থেকে ইংরেজি পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য ঐচ্ছিক ইংরেজি এবং এ বিষয়ে ১৫ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।

নিয়মে বলা হয়, ঐচ্ছিক ইংরেজির উত্তর করলে অন্য বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকবে কিন্তু ঐচ্ছিক ইংরেজির উত্তর করা ছাড়া অন্য বিভাগে ভর্তি হওয়া গেলেও ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হওয়া যাবে না। সে নিয়মই এখন গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নোটিশ বোর্ডে টানানো ফলাফলে দেখা যায়, ইংরেজি পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শিক্ষার্থী ঐচ্ছিক ইংরেজির উত্তর করেছেন। এর মধ্যে বিভাগে ভর্তির শর্ত অনুযায়ী ১৫ নম্বর পেয়েছেন মাত্র দুজন শিক্ষার্থী। আবার এ দু’জন ইচ্ছে করলে অন্য বিভাগেও ভর্তি হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ১২৫ সিটের মধ্যে সবগুলোই ফাঁকা থাকার সম্ভাবনা আছে।

এ সম্পর্কে ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে আমরা এমন শিক্ষার্থীও বিভাগে পেয়েছি, যারা ভালো করে ইংরেজিতে একটা লাইনও লিখতে পারে না। যার ফলে এসব শিক্ষার্থীর ফলাফল খুবই খারাপ হয়। এমন কী অনেক শিক্ষার্থী পাস করতে না পারায় ইয়ার লস হয়ে যায়। তাই এবার নিয়মটা একটু কড়াকড়ি করা হয়েছিল, যাতে আগেই ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীর ইংরেজি দক্ষতা দেখে ভর্তি করা যায়।’

তবে কোনো সিট ফাঁকা রাখা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানানো হবে।’

ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান তাহমিনা আহমেদ বলেন, ‘সম্মান শ্রেণী লেভেলে ইংরেজি পড়ার যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষার্থী বাছাই করার জন্য এ নিয়ম করা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।’ তবে এসব ঝামেলা এড়াতে আলাদা প্রশ্নপত্রে ইংরেজি পরীক্ষা নেয়ার কথা তিনি উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলোতে ১৫০ জনের মধ্যে ১২৫ জনকেই ‘খ’ ইউনিট থেকে ভর্তি করানো হতো। বাকি ২৫ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো ‘ঘ’ ইউনিট থেকে।



মন্তব্য চালু নেই