শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে এমপিরা নয়, রায় বহাল

দেশের বেসরকারি স্কুল ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে সংসদ সদস্যদের (এমপি) না রাখা ও বিশেষ কমিটি বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেনি চেম্বার বিচারপতি।

বুধবার চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদন শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

এর ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

আগামী ১২ জুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও রিট আবেদনের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ শুনানি করেন।

এর আগে গত ১ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৫ ধারাকে বাতিল করেন হাইকোর্ট। এর ফলে এ বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে পারবেন না বলে জানান রিট আবেদনকারী ‍আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরাত জাহান বলেছেন, এ রায়ের ফলে চারটি প্রতিষ্ঠানে নতুন করে কোনো সংসদ সদস্য সভাপতি হতে পারবেন না। এখন যারা আছেন তারা মেয়াদ শেষ করতে পারবেন।

এ কারণে হাইকোর্ট ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জন্য গঠিত বিশেষ কমিটি অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। এর ফলে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপির নেতৃত্বাধীন কমিটিও বাতিল হয়ে যায়।

পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে রাশেদ খান মেনন ও ভিকারুন নেসা স্কুলের অধ্যক্ষ আপিল করেন।

গত ১৩ এপ্রিল এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং নির্বাচন ছাড়া কমিটি গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা ২০০৯-এর ৫ ও ৫০ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫ ধারা হচ্ছে এমপিদের সভাপতি পদ ও ৫০ ধারা হচ্ছে বিশেষ কমিটি গঠন নিয়ে। আজ আদালত দুটি ধারা বাতিল করেছেন। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেছেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যাদেশের (১৯৬১) আওতায় ‘মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমকি স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৫ ধারা (গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়ন) এর (১) উপবিধিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এমন সংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির দ্বায়িত্বগ্রহণ করিতে পারিবেন।’

‘(২) উপ-বিধান ১ এর অধীন সভাপতির দায়িত্বগ্রহণের জন্য স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য, তাহার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত যে সকল উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করিতে ইচ্ছুক তাহার উল্লেখসহ লিখিতভাবে এই প্রবিধানমালার অধীন বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট তাহার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিবেন এবং উক্ত অভিপ্রায়পত্র সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানসমূহের সভাপতি হিসেবে তাহার মনোনয়নরুপে গণ্য হবে।’

৫০ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি-বিশেষ পরিস্থিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা, ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাইবে।’



মন্তব্য চালু নেই