রাঙামাটির কিছু খবর :

শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের কাজ চলছে : গওহর রিজভী

১৯৯৭ সালে করা পার্বত্য শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পার্বত্য শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।

এ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক কাজ হচ্ছে উল্লেখ করে গওহর রিজভী বলেন,‘ শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। শান্তিচুক্তি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পুরোপুরি বাস্তবায়নে সরকার খুবই আন্তরিক। ’
‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নিজস্ব দাবি নেই জানিয়ে শন্তু লারমা সাংবাদিকদের বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অনেক দাবি আছে। পার্বত্য সমস্যা সমাধানের জন্য চুক্তি হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নে আমরা আশাবাদী।

তিনি বলেন, মানুষ আশা নিয়ে জীবনযাপন করে আমারও আশা নিয়েই বেঁচে আছি। বৈঠকে পার্বত্য চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আশাকরি সরকার আন্তরিকভাবে আমাদের দাবি পূরণে কাজ করবে। কারণ দাবি পূরণটা হচ্ছে আন্তরিকতার বিষয়। ’

বৈঠকে আলোচনা এবং দাবি বাস্তবায়নে সরকারের আশ্বাসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ এখন কিছু বলতে পারব না। রাঙ্গামাটি গিয়ে দলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত বলব। ’

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা জানান, বৈঠকে ‘পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের কিছু সংশোধনের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। পার্বত্য ভূমি কমিশনকে আরো কার্যকর করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের ৩৩টি বিষয়ের মধ্যে ৩০টি বিষয় ইতিমধ্যে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাকি তিনটির ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিই প্রধান সমস্যা তাই এ ব্যাপারে আলোচনা শেষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’

দুই ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে শন্তু লারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের নিন্দা ও প্রতিবাদ
শনিবার রাঙামাটি শহরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাথে যুব ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক 4751imagesও হিল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, আরটিভির রাঙামাটি প্রতিনিধি ইয়াছিন রানা সোহেল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন সহ পাঁচ সংবাদ কর্মীর উপর হামলা ও ক্যামরা ছিনতাইয়ের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়ন।

রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মিল্টন বড়–য়া এক বিবৃতিতে বলেন, সাংবাদিকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলায় আমরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাই। দিনে দুপুরে এমন হামলায় প্রশাসনের নিরবতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতাকে তিনি দায়ি করেন। তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রদি দাবি জানান। অন্যথায় এ ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটির সাংবাদিক সমাজ কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।

উল্লেখ্য, শনিবার পিসিপির সাথে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাথে সংঘর্ষের সময় পেশাগত দায়তআব পালনকালে যুবলীগ কর্মীরা বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে এবং দুটি ক্যামের ছিনিয়ে নেয়।

 

পাহাড়ি-বাঙ্গালী সংঘর্ষের জের-রাঙামাটি শহরে কারফিউ

পাহাড়ি-বাঙ্গালী ষংঘর্ষ ও উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ১৪৪ ধারার পর রাঙামাটি শহরে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। রবিবার রাত ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত রাঙামাটি শহরে কারফিউ জারি করে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট। তিন ঘন্টা শিথিল রাখার পর সোমবার ১১টা থেকে 47532323রাঙামাটি শহরে আবারো কারফিউ জারি করা হয়েছে।

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনকে কন্দ্রে করে দুপক্ষের সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার বিকেলে আইন শৃঙ্খলা বৈঠক চলাকালে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শহরের কয়েকটি জায়গায় পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন কারফিউ জারি করে।

এদিকে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিব, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাব ৭ এর কয়েকটি দল টহল দিচ্ছে।
শহরে যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন জানান, পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কারফিউ থকবে।
পুলিশ জানায়, গতকাল রবিবার রাতে শহরের বনরূপা কাঁচা বাজারে দুই বাঙ্গালী ব্যবসায়ীকে পাহাড়িরা মারধর করলে দুপক্ষের উত্তেজনা শুরু হয়। পাহাড়িরা ভেদভেদি এলাকায় দুটি দোকানে আগুন দেয়। এ সময় তারা সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এসব ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত শনিবার রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ক্লাস উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাথে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকে শহরের পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকে।



মন্তব্য চালু নেই