‘শহীদদের অবমাননার বিচার জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম’

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে বীর শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা করেছেন। এর বিচার জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম। দেশের সাধারণ মানুষ আগামী নির্বাচনে এর সমুচিত জবাব দেবে।’

তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

ফোরামের সেক্রেটারি সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক শ্যামল সরকার। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির উদ্দিন আহমেদ।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হবে। আর তা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।’

বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাকে খুব ¯েœহ করতেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই থাকতাম আমি। তার সঙ্গে একই গাড়িতে চড়তাম। পেছনে বসতেন চার নেতারা।

প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে ভারতের কাছ থেকে ১০০ কোটি রুপি রিজার্ভ ধার নিয়ে বাংলাদেশ তার কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৫ সালে হয়তো ৫শ কোটি টাকা ছিল রিজার্ভ। বর্তমানে ২৭ বিলিয়ন কোটি ডলার রিজার্ভ রয়েছে। ১৬০ মিলিয়ন লোক রয়েছে। আর স্বাধীনতার সময় ছিল ৭ কোটি মানুষ। ৭২ সালে মানুষ চাল পেত না। এখন আমরা চাল রফতানি করতে পারি। অর্থনৈতিকভাবেও আমরা স্বাবলম্বী। গড় আয়ু বেড়েছে আমাদের। কুঁড়ে ঘরের জায়গায় স্থান পেয়েছে টিনের ঘর।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছেন সোনার বাংলা গড়ার। আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেলেন, শোষণমুক্ত দেশ দেখতে পারেন নি। তার সুযোগ্য কন্যা সেই চেষ্টা করছেন। স্বাধীনতার চেতনা পূনরুদ্ধার হয়েছে। তার কন্যা শেখ হাসিনার চেষ্টায়ই বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে।’

বিএনপি জোটের নাশকতার কথা তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৩ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে তারা আমাদের অর্থনীতিকে নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। সর্বদলীয় নির্বাচনের জন্য সংলাপে ডাকা হলেও বিএনপি সংলাপে আসেনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ধ্বংস করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়েছে। হরতাল অবরোধের নামে নাশকতা, জ্বালাও পোড়াও করেছে। তাদের পেট্রোল বোমার আঘাত থেকে শিশুও রেহাই পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে একটি সফল রাষ্ট্র হিসেবে আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি। কর্নফুলি ট্যানেল হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা সম্ভব হয়েছে।’

তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ব্যবসায়ী বান্ধব এই সরকার। এখানে বিএনপির অনেক ব্যবসায়ীও রয়েছেন। তাদের কোনো সমস্যাও হচ্ছে না। সবার জন্য কাজ করছে সরকার। আইটি, শিপিং, ঔষধ, লেদার, ফার্নিচার, কৃষি এবং পাট শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কাজ করছি। যুক্তরাষ্ট্রে একক বাজার হিসেবে আমাদের অর্জন রয়েছে। এ দেশে আমাদের রাফতারি বাড়বে যা ১৭ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া স্বাধীনতাকে আঘাত করেছেন। শহীদদের তথ্য নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে এটাই প্রমাণ করেছেন যে, তিনি এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছেন। প্রমাণ করেছেন তিনি বাংলাদেশি নন।



মন্তব্য চালু নেই