শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হরমোন নিয়ন্ত্রণ
নতুন বছরের শুরুতে অনেকেরই প্রতিজ্ঞা থাকে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার। আর এ কাজে আপনার সহায়ক হতে পারে হরমোন-বিষয়ক কয়েকটি তথ্য। কারণ অপরিকল্পিতভাবে শুধু শারীরিক পরিশ্রম কিংবা খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই ওজন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন আরো কিছু তথ্য জেনে নেওয়া।
১. গ্রেলিন : দেহের একটি হরমোন গ্রেলিন, যা ক্ষুধার হরমোন নামেই পরিচিত। আপনি যদি কোনো একটি বেলার খাবার বাদ দেন তাহলে আপনার দেহে এ হরমোনটির মাত্রা বেড়ে যায় এবং এর সঙ্গে ক্ষুধাও বাড়ে ব্যাপকভাবে। এতে সামনে যে খাবারই আসুক না কেন, তা খাওয়ার লোভ সামলানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। গ্রেলিন হরমোনটির এমন আচরণের কারণেই কোনো একটি বেলার খাবার পুরোপুরি বাদ দিলে আপনার ওজন আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সঠিক মাত্রায় খাবার খাওয়ার বিষয়টিও এর সঙ্গে সম্পর্কিত। এক গবেষণায় দেখা যায়, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রেলিন হরমোনটির মাত্রা কম রাখে। সকালে প্রোটিনযুক্ত নাশতা দেহের গ্রেলিন হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে তা ক্ষুধাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তাই সকালের নাশতায় প্রোটিনসমৃদ্ধ পর্যাপ্ত খাবার রাখা হলে তা ক্ষুধা কমিয়ে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।
২. লেপটিন : লেপটিন নামের আরেকটি হরমোন আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আপনার খাওয়ার সময় এ হরমোনটি জানিয়ে দেয়, কখন পর্যাপ্ত খাওয়া হয়েছে এবং এখন থামা উচিত কি না। তবে এ হরমোনটির প্রভাব বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে। আর সে অবস্থায় পর্যাপ্ত খাওয়ার পরও আপনার খাওয়া বন্ধ করার সিগন্যালটি মস্তিষ্কে নাও পৌঁছাতে পারে। এতে খাওয়া বেড়ে গিয়ে দেহের ওজন বাড়ার শঙ্কা থাকে।
দেহের এ হরমোনটির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেসব খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এ হরমোনটির মাত্রা ঠিক রাখা যায় তার মধ্যে রয়েছে ইলিশ, রূপচাঁদা, পাঙ্গাশ, স্যামন ও সার্ডিন মাছ। আরেকটি বিষয় হলো পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুমের অভাবে দেহের এ হরমোনটির মাত্রা কমে যায় এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়।
৩. কর্টিসল : মানসিক চাপের সঙ্গে কর্টিসল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর কর্টিসলের মাত্রা বাড়লে আপনার দেহের ওজন নিশ্চিতভাবে বাড়বে। কারণ এ হরমোনটি দেহের পেট ও কোমরের আশপাশে চর্বি জমতে ইন্ধন জোগায়। যেকোনো মানসিক চাপের পরিস্থিতিতে আপনার দেহের কর্টিসল বেড়ে যায়। আর তাই মানসিক চাপ নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখা এ হরমোনটি নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর্টিসল নিয়ন্ত্রণের জন্য চা-কফি পান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মানসিক চাপ বাড়লে প্রয়োজনে চা-কফি পুরোপুরি বাদ দিতে হবে।
মন্তব্য চালু নেই