শতকোটি টাকা ব্যয়ের পর বোধোদয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের
প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করার পর হুশ হয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের। ২০১১ সালে একটি বড় প্রকল্পের কাজ হাতে নেয় এই মন্ত্রণালয়টি। ফলে প্রকল্পের আওতাধীন প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বুড়িগঙ্গা দূষণমুক্ত’ প্রকল্পের কিছু কাজ করা হয়েছে। কিন্তু এখন বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষই বলছে, প্রকল্প এলাকায় ১০টি সেতু থাকায় এগুলো অপসারণ না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
জানা যায়, ২০১১ সালে বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করতে ৯৪৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো)। প্রকল্পের আওতায় যমুনা থেকে বুড়িগঙ্গায় পানি আনতে টাঙ্গাইলসহ আশপাশের এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নিউ ধলেশ্বরী, পুংলী, বংশী ও ঢাকার তুরাগ নদের ১৬২ কিলোমিটার খনন করা হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাল ছিল তিন বছর। প্রকল্পের অধীনে নদীর উৎসস্থলে একটি অফটেক রেগুলেটর (স্লুইসগেট), একটি ফিশ পাস (মাছ আসা-যাওয়ার বিশেষ পথ) রেগুলেটর ও ১৬২ কিলোমিটার নদী ড্রেজিংয়ের সংস্থান রাখার কথা। গত অর্থবছরে ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ কিলোমিটার নদীপথ খনন করা হয়। এক বছরেই খননকৃত স্থানে পলি পড়ে। সরকারের বরাদ্দ দেওয়া পুরো টাকাটাই পানিতে চলে যায়। এ ছাড়া প্রকল্পে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পরামর্শকদের বেতন, গাড়ি ক্রয়সহ অন্যান্য খাতে আরও ৩০ কোটি টাকা খরচ হয়। আসলে অর্থই খরচ হয়েছে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাস্কফোর্সের রিপোর্টে প্রকল্পের নানা অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে, ১০০ কোটি টাকা খরচের পর প্রকল্পের আওতায় যেসব নদী রয়েছে, এর ওপরে বিদ্যমান ব্রিজ অপসারণ না করলে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তারা। সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে বিষয়টি জানানোর পর প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের তিরস্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় সরকারের কয়েকটি ব্রিজের কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। তবে এটি প্রকল্প শুরুর আগেই চিন্তা করা উচিত ছিল। এ মুহূর্তে ব্রিজগুলো সংস্কার করা দুরূহ হয়ে পড়বে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সংস্কার করতে যে সময় প্রয়োজন, এর মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
মন্তব্য চালু নেই