শঙ্কায় ভাড়াটিয়া-বাড়িওয়ালা, সর্তক পুলিশ

এক সপ্তাহের মধ্যেই সিলেট, মৌলভীবাজার ও কুমিল্লার চার চারটি ভয়ঙ্কর জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব আস্তানায় জঙ্গিদমনে সফলভাবে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তবে সফলতার পাশাপাশি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার প্রাণহানিও হয়েছে। আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছে বেশ কিছু জঙ্গি। এরপরেও সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থেকে জঙ্গিদমন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

তবে জঙ্গিদের এই বিস্তারে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক থাকলেও ভাড়াটিয়া-বাড়িওয়ালাদের ফেলে দিয়েছে চরম শঙ্কায়। সম্প্রতি এসব ভয়ঙ্কর জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়ায় নতুন করে ভীতিসঞ্চয় হয়েছে নগরকেন্দ্রিক মানুষের মধ্যে। সবচেয়ে বেশি দুঃশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালারা। কেননা, জঙ্গিদমন অভিযানে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছেন বাড়িওয়ালাদের পাশাপাশি পাশের ভাড়াটিয়ারাও।

বর্তমানে বাড়ি ভাড়া নিতে গিয়ে নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে ভাড়াটিয়াদের মধ্যে। বাড়ি ভাড়া নেয়ার আগে তাদের ভাবতে হচ্ছে তার পাশের ফ্ল্যাটে কারা থাকছেন। তাদের মধ্যে কোনো জঙ্গি রয়েছে কিনা? অন্যদিকে বাড়িওয়ালারাও বাড়ি ভাড়া দিতে ভয় পাচ্ছেন। যারা বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন তারা জঙ্গি গোষ্ঠির সদস্য কিনা? এ নিয়ে ভীতি রয়েছে তাদের মধ্যে। তবে জঙ্গি দমনে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।

ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশ রাজধানীর মোড়ে মোড়ে, পাড়া-মহল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়ে বাড়িওয়ালাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। ওইসব ব্যানার ও ফেস্টুনে লেখা রয়েছে, বাড়ি ভাড়া দেয়ার পূর্বে ভাড়াটিয়া সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য নিন এবং প্রয়োজনে পুলিশের সহযোগিতা নিন। আরও লেখা রয়েছে, বাড়ির সকল ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংশ্লিষ্ট থানায় এক কপি জমা দিন।

সম্প্রতি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহলে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। ওই বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ৪ জঙ্গির লাশ উদ্ধার করেন। এছাড়াও সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য।

এদিকে মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৭/৮ টি ছিন্নভিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই বাড়ি থেকেও উদ্ধার করা হয় শক্তিশালী বোমা। এছাড়াও জেলার বড়হাটে অভিযান চালিয়ে তিন জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্যদিকে কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ীর দক্ষিণ বাগমারা বড় কবরস্থানের পাশে তিন তলা একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেখানে কোনো জঙ্গি পাওয়া যায়নি। এসব কারণেই হঠাৎ করে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের মধ্যে নতুন আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

সিলেটের আতিয়া মহলের আশপাশ এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক এখনও কাটছে না। তারা নতুন ভাড়াটিয়া তোলা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। একই পরিস্থিতি মৌলভীবাজার ও কুমিল্লাতেও। এসব শহরের বাসিন্দারা নতুন ভাড়াটিয়া কিংবা যারা আগে থেকেই আছে তাদের সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাচ্ছে। সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করলেই তারা পুলিশকে জানাতে চেষ্টা করছে।

তবে সরকার যেভাবে জঙ্গি দমনে সচেতন রয়েছেন, তাতে করে এদেশে জঙ্গিরা আর কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না বলেই মত দিচ্ছেন জনগণ।



মন্তব্য চালু নেই