শক্তিবর্ধক ওষুধ সেবনের তথ্য জানতে হামলাকারীদের ভিসেরা সংগ্রহ

গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীরা কোনো প্রকার শক্তিবর্ধক ওষুধ সেবন করেছিল কি না-তা পরীক্ষা করতে তাদের ভিসেরা ও রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘ভিসেরা পরীক্ষার জন্য তাদের যকৃৎ, কিডনি, পাকস্থলী ও পাকস্থলীতে থাকা খাবারের নমুনা মহাখালী রাসায়নিক পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে রিপোর্ট পাওয়া যেতে পারে।’

গুলশানে ১ জুলাইয়ের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জঙ্গিদের ভিসেরা এবং রক্ত সংরক্ষণের জন্য আদালতের মাধ্যমে ঢামেক হাসপাতালের ফরেসসিক বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।

চিঠি পাওয়ার পর বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীরা কোনো প্রকার শক্তিবর্ধক ওষুধ সেবন করেছিল কি না-তা পরীক্ষা করতে তাদের ভিসেরা ও রক্ত সংগ্রহের জন্য ডিএমপি থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে রিপোর্ট পাওয়া যাবে।’

ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘নিহতদের সবার লাশের ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ৪ জন চিকিৎসক ও তাদের ৫ জন সহকারী। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৩ জুলাই সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা ময়নাতদন্ত করেন।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। দু-এক দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সোহেল মাহমুদ আরও জানান, সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ বিদেশিসহ যে ২০ জন্য নিহত হন তাদের ১ জুলাই রাত ১২টার আগেই হত্যা করা হয়। সবাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ৭ জনের শরীরে মোট ৮টি গুলি পাওয়া গেছে। নারীদের ওপর হত্যাকারীদের বেশি আক্রোশ ছিল। হত্যার শিকার নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে কি না—তা পরীক্ষার জন্য হাইভেজোনাল সফট সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহত ৬ জঙ্গির মধ্যে বোমায় একজনের হাতের কবজি, একজনের হাত ও একজনের মুখের একপাশ থেঁতলে গেছে। বাকি তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তা বুধবার তারা পেয়েছেন।

গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। ১২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি সংকটের সময় জঙ্গিরা ১৮ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে। তাদের বোমায় নিহত হন দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা। পরে জিম্মি উদ্ধার অভিযানে ওই রেস্তোরাঁর ৬ জঙ্গি নিহত হয়।



মন্তব্য চালু নেই