লন্ডনেও বৈঠক করেছেন আসলাম চৌধুরী

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরী সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে লন্ডনেও মোসাদের এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মার্চের মাঝামাঝিতে এ বৈঠক হয় বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।

রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদকালে আসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দারা।

আসলাম চৌধুরীকে গত রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার থেকে তিনি সাত দিনের রিমান্ডে আছেন।

আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে করা মামলা তদারক করছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে যেসব অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারে আসলাম চৌধুরী তথ্য দিচ্ছেন। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আরো কেউ জড়িত কি না তাও জিজ্ঞেস করা হবে।

আসলাম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, এমন একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৮ থেকে ২০ মার্চ বিএনপির এ নেতা লন্ডন ছিলেন। এ সময় হোটেল ওয়েস্ট মিনিস্টারে মিস্টার রহমান (ছদ্মনাম) নামের এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে মোসাদের এজেন্টও ছিল বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে। সেখানে মেন্দি এন সাফাদিও ছিলেন। মেন্দি ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির নেতা। ওই বৈঠকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের আরো কয়েকজন প্রতিনিধি ছিলেন। ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি কে, বৈঠকে কোন ধরনের আলোচনা হয়েছে তা আসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। বৈঠকের ব্যাপারে বিস্তারিত না বললেও তিনি যে লন্ডন গেছেন তা স্বীকার করেছেন। তবে তার লন্ডনযাত্রা শুধু ব্যবসায়িক কারণে ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন। আর ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি কে তা জানা নেই বলে আসলাম গোয়েন্দাদের জানান। বুধবার দুপুর পর্যন্ত তিনি জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দেন। সন্ধ্যার পর তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গোয়েন্দারা বলছেন, রিমান্ডে মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তা স্বীকার করেন। কিন্তু তা সরকারবিরোধী নয় বলে জানান। ওই বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ ছবি আছে বলে জানান আসলাম। পরে রাজধানীর নিকেতনে আসলামের অফিসে তার ব্যবহৃত কম্পিউটার থেকে ওই বৈঠকের ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা কোন প্রক্রিয়ায় করা যায় তা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বুধবার বৈঠক করেছেন। এ সময় গোয়েন্দাদের কাছে যেসব তথ্য ছিল তা উপস্থাপন করা হয়। এরপরই সিদ্ধান্ত হয় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। মামলাটি বৃহস্পতিবার বা রোববার করা হতে পারে। তার আগে তদন্ত সংস্থা মামলা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবে।

২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসলাম বিএনপির মনোনয়ন পান। ২০০৯ সালে তিনি দলের বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও একপর্যায়ে আহ্বায়কের দায়িত্ব পান।

রোববার খিলক্ষেত থানার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে মহানগর উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে। এর আগে থেকেই পুলিশ তাকে খুঁজছিল। আটকের পর তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে গোয়েন্দারা। তার বিরুদ্ধে আরো মামলা করা হবে বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই