রাবি উপাচার্যকে শাসিয়ে গেলেন সংসদ সদস্য

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যকে টেবিল চাপড়ে শাসিয়ে গেছেন রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রাবি উপাচার্যের দফতরে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়া তিনি রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের সভাপতি পদে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেয়া অনিয়মের অভিযোগের কারণে মেডিক্যাল কলেজটিকে জরিমানা করার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

রাবি উপার্যের দফতর সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিনের দফতরে মেডিক্যাল কর্মকর্তা নিয়োগের বোর্ড চলছিল। বেলা ১টা ১০ মিনিটের দিকে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক। কিন্তু উপাচার্য নিয়োগ বোর্ডে থাকায় তার সঙ্গে পরে দেখা করতে চান।

এর ১০ মিনিট পরই ওমর ফারুক, তার ব্যক্তিগত সহকারী দীপায়ন সরকারসহ ৪-৫ উপাচার্যের দফতরের অপেক্ষমাণ কক্ষে ঢোকেন। এরপর অফিস সহকারীরা উপাচার্যকে বিষয়টি জানালে তিনি নিয়োগ বোর্ড সংক্ষিপ্ত করেন। পরে সংসদ সদস্য উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় রাবির উপউপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানসহ নিয়োগ বোর্ডের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কক্ষে প্রবেশ করেই ওমর ফারুক চৌধুরী উপাচার্যের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন এবং টেবিল চাপড়ে উপাচার্যকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। প্রায় পাঁচ মিনিটের মতো সেখানে বিভিন্নভাবে উপাচার্যকে শাসিয়ে বের হয়ে যান।

জানা যায়, সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর পরিচালিত শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে ছাত্রভর্তিসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে কলেজটিকে জরিমানা করা হয়। এর জের ধরে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন সংসদ সদস্য।

রাবি উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, সাংসদের পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজটিতে একাডেমিক অনুমোদন ছাড়াই ছাত্র ভর্তি করাসহ নানা অসংগতির কারণে কলেজ পরিদর্শক দল কলেজটি পরিদর্শন শেষে জরিমানা করেন। সেটা নিয়ে কথা বলতে তিনি দফতরে এসে খারাপ ব্যবহার করেন। তিনি আরো বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে উপাচার্যের দফতরে ঢুকে তিনি খুবই খারাপ ভাষায় কথা বলেছেন। এতে আমি উপাচার্য হিসেবে অপমানিত বোধ করছি। আমি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা মওকুফের ফাইলটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেটা নিয়ে কথা বলার জন্যই উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। তিনি বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যদি তিনি মনে করে থাকেন আমি খারাপ আচরণ করেছি তবে আমার দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু করার নেই। তবে শালীনতার মাত্রাটি উনি আগে অতিক্রম করেছেন না আমি করেছি তা তিনিই বলতে পারবেন।



মন্তব্য চালু নেই