রানীশনকৈল বৈশাখী মেলায় মাটির টেপাপুতুল

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশনকৈলে সপ্তাহব্যাপি বৈশাখী মেলার সংস্কৃতি জগতের আলোচিত ব্যক্তিত্ব অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে মেলার জুড়ে বৈচিত্র রকমের কারুপণ্যের সমহার দেখা গেছে। বাংলার প্রকৃতিতে যার স্থান অনেকের কাছেই প্রিয় বৈশাখী মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় মাটির শিল্প কর্ম। দর্শনার্থীদের ভীর ছিল অতুলনীয়। মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস পত্র বৈশাখী মেলার প্রাণ বলা যেতে পারে। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বণিতাসহ সকলের কাছে অধিক আকর্ষণীয়। এর মধ্যে শখের হাঁড়ি, মাটির বিভিন্ন প্রকার টেপাপুতুল, মাছ, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, বর-কণে, নথ পড়া বউ, পুতুল সহ বিভিন্ন ধরনের ফলমুল, তরমুজ, মরিচ, কাঁঠাল বৈশাখী মেলার দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে একটু ভিন্নমাত্রায়।

হাড়ি,কলসী ছাড়াও আমাদের দেশে এক সময় গড়ে উঠেছিল সুন্দর সুন্দর পোড়া মাটির ফলকের কাজ। এর অন্য একটি নাম টেরাকোটা। ঐতিহ্যবাহি রানীশনকৈলের বৈশাখী মেলাতে সাধারণ মানুষ প্রাণ খুঁজে পায়। অন্যান্য মেলার সাথে রানীশনকৈল বৈশাখী মেলার তুলনা একবারেই ভিন্ন রকমের। এখানে কবি গান, আঞ্চলিক নাটক, কবিতা আবৃতি, কৌতুক শোনার জন্য সদুর দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও থেকেও সাংস্কৃতি প্রিয় মানুষ ছুটে আসে।

এমন একটি মেলায় দেখা গেছে দু’দুজন সাংসদ সদস্যের আবৃতি আর গানে সাধারণ মানুষ প্রাণ ফিরে পায় মনের মাধুরী মিশিয়ে বৈশাখী মেলার উদ্যান জুড়ে।

বৈশাখী মেলার মাটির শিল্পকর্ম গুলো মূলতঃ নিয়ে আসা হয়েছে সৈয়দপুরের পালপাড়া থেকে। রানীশনকৈলের বিভিন্ন এলাকায় পাল বস্তির সন্ধান পাওয়া গেলেও মাটির কলসী, হাড়ি, পনা, ঢাকনা সহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস পত্র তৈরি করে থাকে পালরা। মাটির দাম বেশি হওয়ার কারণে সুবিধা মত জিনিস পত্র তৈরি করতে পারছেন না বললেন জৈনেক পালদের একজন। প্রায় বিলুপ্তির পথেই এমন শিল্প কর্ম।

IMG_20150502_184148

বাংলাদেশের ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের বৌদ্ধস্তুুপ, দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরে পোড়া মাটির শিল্প কর্ম দেখতে পাওয়া যায়।

অন্যদিকে রানীশনকৈল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামের উদ্দ্যোগে কলেজের মেইন গেটে শোভা পাচ্ছে আধুনিক টেরাকোটা শিল্পকর্ম। ভিন্ন আঙ্গিকের এই শিল্পকর্মটি তৈরি করেছেন ঐ কলেজের চারুকলার বিভাগের প্রভাষক সফিকুল ইসলাম শিল্পী। বিষয়বস্তু হিসাবে প্রাধ্যন পেয়েছে জ্ঞান চর্চা করার স্মৃতিশক্তির বিকাশ, সুন্দর্য্য শৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেওয়ার পথিকৃত হিসাবে শাপলা ফুল ও পাতা, সুন্দর মন নিয়ে পথচলার আলোকে নীল আকাশের সাদা বক উড়ে যাওয়া এর আদলে শিল্প কর্মে স্থান পেয়েছে বিষয়বস্তু।

এই শিল্প কর্ম রক্ষা করার দায়িত্ব সচেতন সংস্কৃতিবান, ব্যক্তিত্ববান ও সুন্দরের পুজারি শিল্পাঙ্গনে বিচরণকারী সমাজের সুন্দর প্রিয় মানুষদের!!



মন্তব্য চালু নেই