রাণীনগরে বন্যায় মৎস্য চাষীদের সাড়ে ৩ কোটি টাকা ক্ষতি

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ৬শ’ পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় বিপুল পরিমান ক্ষতি হওয়ায় মৎস্য চাষীরা এখন হতাশায় ভূগছে। বন্যা পরিস্থিতি দফায় দফায় অবনতি হওয়ায় এখনো তিন শতাধিক পুকুর হুমকীর মুখে রয়েছে। যে কোন সময় পুকুরের পাড় ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে মাছ ভেসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

জানা গেছে, নওগাঁর ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গত ২৪ আগষ্ট ভোরে রাণীনগর-আত্রাই সড়কের পূর্ব মিরাপুর নামক স্থানে সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় রাণীনগর উপজেলায় প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবেশ করলে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে গোনা ইউনিয়নে ১৮৬টি, কাশিমপুর ৫৪টি, মিরাট ৭৪টি, রাণীনগর সদর ৩৭টি, বড়গাছা ৪৫টিসহ ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ শতাধিক পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলে ২২৮.১৪ মেট্রিক টন মাছ ভেসে যায়। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা বলে রাণীনগর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও কালীগ্রাম ইউনিয়নের করজগ্রামের কাজী আনিছুর রহমানের ২টি পুকুরসহ আরো ২/৩টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে । যার আনুমানিক মূল্যে ৩ লাখ টাকা।

গোনা গ্রামের বিশিষ্ট মৎস্য চাষী জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার নিজের ৩টি সহ মোট ১১টি পুকুরে আমি মাছ চাষ করেছিলাম। হঠাৎ করে বন্যা এসে পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। তাতে আমার প্রায় ১৮ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এত বড় ক্ষতি আমার মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে কেটে ওঠা খুবই কঠিন। সরকার যদি আর্থিক কোনো সহযোগীতা করে তাহলে পানি নেমে গেলে হয়তো নতুন করে আবার মাছ চাষ শুরু করতে পারবো। পারইল গ্রামের খলিলুর রহমান জানান, আমার হ্যাচারির ডিম, ছোট মাছ সহ নিজের ২টি ও লীজকৃত ৪টি পুকুরে বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মতো।

রাণীনগর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, এ বন্যায় রাণীনগরে মৎস্য চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমার দপ্তর থেকে ৫৯১টি পুকুরের ক্ষয় ক্ষতির তালিকা তৈরি করেছি। বন্যা পরিস্থিতি দফায় দফায় অবনতির কারণে নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করায় পুকুরের ক্ষতির পরিমাণ প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এপর্যন্ত আমার দপ্তর থেকে প্রায় ৩কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার টাকার মতো আর্থিক ক্ষতির তালিকা নওগাঁ জেলা মৎস্য অফিসে প্রেরণ করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের কোন ধরণের সরকারি সহযোগীতার নির্দেশনা আসলে অবশ্যই এই ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের আর্থিক সহযোগীতা করা হবে। #



মন্তব্য চালু নেই