রাণীনগরে কালবৈশাখীর ছবল ॥ বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বুধবার রাতে কালবৈশাখী ঝড় ও আংশিক শীলা বৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি ও ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে প্রান্তিক মাঠ পর্যায়ে জিরা জাতের ধান লম্বা হওয়ার কারণে বৃষ্টি আর বাতাসে ধানের গাছ গুলো নুয়ে পড়ে গিয়ে মাটি আর পানিতে একাকার হয়ে গেছে।

জমিতে বৃষ্টির পানি জুমে যাওয়ার কারণে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে। স্থাণীয় কৃষি বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরা বলছে বৃষ্টিপাতের কারণে বেশকিছু ধান মাটিতে শুয়ে পড়লেও তেমন কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা নেই। চলতি মৌসুমে কৃষকরা ইরি-বোরো ধানের ভাল ফলনের বুকভরা আশা করলেও গত বুধবারের কালবৈশাখী ঝড়, আংশিক শীলা বৃষ্টি আর মসুল ধারে বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের ক্ষতি হওয়ায় আশানুরুপ ফলন নিয়ে চাষিরা শংকায় পড়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতিতে রাণীনগর উপজেলায় বোরো ধানের চাষ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে।

রাণীনগর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৬ শ’ ১০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তার চেয়ে বেশি জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে রাণনীগর বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের গভীর নলকূপ ২শ’ ৬২টি, বিদ্যুৎ চালিত ব্যক্তিগত ১শ’ ১৫টি, ডিজেল ৯৮টি, অগভীর বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত ৩ হাজার ৩শ’ ৪৬টি, নদী থেকে এলএলপি বিদ্যুৎ চালিত পাম্প ২১টি’র মাধ্যমে আবাদি ইরি-বোরো ধান ক্ষেতে সেচ প্রদান করছে। বুধবারের কালবৈশাখী ঝড়, আংশিক শীলা ও মসুলধারে বৃষ্টির কারণে সকল জাতের ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার সিম্বা গ্রামের কৃষক মোস্তাক হোসেন প্রাং জানান, আমি চলতি বোরো মৌসুমে ১২ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। গত বুধবার রাতের ঝড় ও আংশিক শীলা বৃষ্টিপাতে আমার দশ বিঘা জমির ধান মাটিতে পড়ে গেছে ও জমি থেকে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই এবছর ফলন বিপর্যয়ের শংকায় আছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ আফিসার সবুজ কুমার সাহা জানান, আমি নিজে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ঘুরে দেখেছি বুধবার রাতের ঝড়ে ধানের বেশকিছু অধাপাকা ধান শুয়ে পড়েছে। দুই তিন দিন রোদ হলে ধানের তেমন কোন ক্ষতি হবে না। এনিয়ে মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। ইতিমধ্যেই ধান পাকা শুরু হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই আংশিক ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে। চলতি বোরো মৌসুমে ভাল ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই