রাণীনগরে কবিগুরু’র নির্মিত দুটি মন্দির ধ্বংসের পথে
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা কালীগ্রাম পরগণার কসবা মৌজায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে নির্মিত শিব ও কালী দুটি মন্দির ধ্বংসের মুখে। মন্দির দুটি দীর্ঘ দিনের হলেও এর সংস্কার কিংবা রক্ষনাবেক্ষনের সরকারী পর্যায়ে কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। ঠাকুর পরিবারের ৩৬ বিঘা আবাদি জমিসহ ১৮ বিঘার একটি পুকুর বিভিন্ন ভাবে ভ’মি দস্যুরা দখলে নিয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মন্দির দুটিতে পূজা-অর্চনা করা হলেও মন্দিরের চারপাশে দখলদারদের দাপটে কালীগ্রাম গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন পূজা বন্ধ করে দেয়।
জানাগেছে, বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিবার আত্রাই উপজেলার পতিসর জমিদারি পরিচালনার সময় কালীগ্রাম পরগণার কসবা মৌজায় প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে কাচারি বাড়ি স্থাপন করে। এখান থেকে কালীগ্রাম পরগণার কসবা, ভান্ডাগ্রাম ও রাতোয়াল গ্রামে জমিদারী পরিচালনা করা হতো। সে সময় এলাকায় কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য ৩৬ বিঘা জমির উপর একটি ১৮ বিঘার পুকুর ও দুটি মন্দির নির্মাণ করা হয়।
কসবা গ্রামবাসি এমদাদুল হক, হালিমা বেওয়া ও রহমান সরদার জানান, প্রায় ২০বছর আগে সরকার একবার সরকারি ভাবে রক্ষনাবেক্ষন ও সংস্কারের উদ্দ্যোগ নিলেও তা না হওয়ায় ইতো মধ্যে কাচারি বাড়ি ভেঙ্গে বসতবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে। কালী মন্দিরটি উত্তর দিকে প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে শিব মন্দিরটি কালের স্বাক্ষী হিসেবে এখনো দাঁড়িয়ে থাকলেও ইতো মধ্যে দখলদাররা শিব মন্দিরের উঠানে ইটের ঘর নির্মাণ করেছে। পুকুরসহ সম্পত্তিগুলো বিভিন্ন ভাবে দখল করা হয়েছে।
কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুকুরসহ ৩৬ বিঘা আবাদি জমি গুলো বেদখল হয়ে গেছে। এত বড় সম্পদ ভ’মি দস্যুদের কবল থেকে উদ্ধারের জন্য রাষ্ট্র পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন সহ মন্দির দুটি সংস্কারের দাবি করছি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, ইতোপূর্বে সরকার সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষনের উদ্দ্যোগ নিলেও তা যথাযথ ছিল না। এই মন্দির দুটি সংস্কার ও অবৈধ দখলদ্বারদের কবল হতে উদ্ধারের জন্য খুব শীঘ্রই প্রয়োজণীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মন্তব্য চালু নেই