রাণীনগরের মাধাইমুড়ি শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী চরক পূজা অনুষ্ঠিত

গত সোমবার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী চরক পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরের পর থেকেই দলে দলে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা, মহিলা-পুরুষ মাধাইমুড়ি শিব ও কালী মন্দীর প্রাঙ্গনে উপস্থিত হতে থাকে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শুরু হয় চরক পূজার প্রস্ততি পর্ব।

৩০ ফুট উঁচু একটি ইউকালেক্টর গাছের মাথায় বাঁশ দিয়ে চরকী তৈরি করে তার এক মাথায় পূজারীর পিঠে বরশী ফুটিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আর বাঁশের অপর মাথায় দড়ি বেঁধে সে দড়ি গাছের নীচের দিকে আর একটি বাঁশ বেঁধে তার মাথায় বেঁধে দেওয়া হয়।

তারপর ৭-৮ জন লোক মিলে নিচের বাঁশ ধরে সজরে ঘোরাতে থাকেন। তার পিঠে বরশী ফুটিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া লোকটি চরক গাছে ঘুরতে ঘুরতে বাতাশা (চিনির তৈরী মিষ্টি) ছিটাতে থাকেন। ভক্তরা সে বাতাশা খুটে খুটে খান।

সোমবার চরক গাছে ঝুলছেন ১জন। তিনি রাজশাহী জেলার মতিয়া থানার বিলসিমলা গ্রামের সুশান্ত (২৩)। তিনি জানান, এর আগেও তিনি বিভিন্ন এলাকায় ৬ বার চরক গাছে ঘুরছেন। এ বছর এমনিতেই মাধাইমুড়ি গ্রামে চরক গাছে ঘুরতে এসেছেন। তার শিক্ষাগুরু নাটোর জেলার সিংড়া থানার হাতিন্দা গ্রামের বাবু চন্দ্র সরকার (সন্নাসী) জানান, আমার ভাগ্নে সখ করে আমার কাছ খেকে এ কাজ শিখেছেন।

স্থানীয় ঠাকুর নারায়ন চন্দ্র চরক পূজার প্রধান পুরোহিত। তার সহযোগী চন্দন জানান, গত বছর পূজার শেষে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে রাখা চরক গাছটি (ইউকালেক্টর গাছ) আগের দির রাতে তোলা হয়। তারপর থেকে চলে পূজা অর্জনা। চরক গাছটি যে গর্তে স্থাপন করা হয় সেখানে আগে পূজা দেওয়া হয়।

তারপর চরক গাছের মাথায় বাঁশের চরকীতে পূজারীকে তুলে দেওয়ার আগে তাকে শীব-কালীর মন্দিরে নিয়ে ঠাকুরের মস্ত্র পাঠের সাথে সাথে তার পিঠে লোহার শিক দিয়ে তৈরি বরশী ফুটিয়ে তাতে দড়ি বেঁধে চরক গাছে ঝুলানো হয়। পূজার শেষে চরক গাছটি আবার পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়।



মন্তব্য চালু নেই