রাজ্যের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশকে পানি দেবো : মমতা

তিস্তা নয়, তোর্সাসহ অন্য নদীর পানি দেওয়া হোক বাংলাদেশকে। কারণ বাংলাকেও তো পানি পেতে হবে। সোমবার তিস্তা প্রসঙ্গে ফের একবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

এদিন কোচবিহার জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকের পর বিকালে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের মানুষের পানির চাহিদা মেটার পর যদি পানি থাকে তবে আমরা অবশ্যই বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দেবো।

বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বন্টনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের বিষযটিও বুঝতে হবে। আমরা যেটা বলি, সেটা পরিস্কার বলি। আমরা সকলকে ভালবাসি, বাংলাদেশকেও খুব ভালবাসি। বাংলার (পশ্চিমবঙ্গ) মানুষ পানি পাওয়ার পর যদি পানি থাকে তবে নিশ্চয়ই বাংলাদেশকে দেবো। কিন্তু বাংলার মানুষই যদি পানি না পায়, তবে আমরা কি করতে পারি। আমরা তো আগেও বাংলাদেশকে পানি দিয়েছিলাম। তাছাড়া আমরা তো বলেছি যে তিস্তার বদলে তোর্সা, মানসাই নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা হোক না’।

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দিল্লি সফরেও প্রতিবেশী দেশকে তিস্তার পানির বদলে বিকল্প প্রস্তাব দেন মমতা। গত ৮ এপ্রিল সকালে হাসিনা ও মমতাকে পাশে রেখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফে তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ার পর ওইদিন রাতেই বিকল্প প্রস্তাব দেন মমতা।

ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান ‘বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা পানি বন্টননের বিষয় খুব শিগগির এবং সর্বসম্মতিক্রমে সমাধান করা হবে’। কিন্তু রাতেই সেই সুর কাটে। ওই দিন দুপরেই শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন মমতা ব্যানার্জি।

শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পরই সাংবাদিকদের সামনে মমতা জানান, ‘তিস্তা আমাদের লাইফলাইন, উত্তরবঙ্গের লাইফ লাইন। এর পানি বন্টন নিয়ে আমাদের সমস্যা রয়েছে। তিস্তার পানি দিলে রাজ্য আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে। তার বদলে আরও চারটি বিকল্প নদীর প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী’। দুই দেশের সরকারকেই এই নিয়ে ভেবে দেখার অনুরোধও জানান তিনি। যদিও মমতার সেই বিকল্প প্রস্তাবে মোদি কিংবা হাসিনা কেউই সাড়া দেননি।

উল্লেখ্য রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুন্ন হবে এই আপত্তি তুলেই ছয় বছর আগে ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ঢাকা সফরও বাতিল করেন মমতা। ফলে অসম্পাদিত রয়ে যায় তিস্তা চুক্তি।



মন্তব্য চালু নেই