রাজস্বের অভাবে ন্যূনতম শিক্ষা স্নাতক হচ্ছে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শিক্ষা বিষয়ে আলাপচারিতার প্রসঙ্গ টেনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন, সবাইকে শিক্ষিত করতে পারলে আমাদের উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে হবে না। উন্নয়ন এমনিতে হয়ে যাবে।

বুধবার (২৫ মে) সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন ন্যূনতম শিক্ষা স্নাতক পর্যন্ত করতে। রাজস্ব আয় না থাকার কারণে আমি এটা করতে পারিনি। রাজস্ব আয় বাড়লে ন্যূনতম শিক্ষা স্নাতক পর্যন্ত করা যেতে পারে। এখন আমাদের মাধ্যমিক পর্যন্ত সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’

মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা সবার জন্য নিশ্চিত করতে গেলে ৬৩ হাজার ক্লাসরুম তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু ক্লাস রুমই নয় শিক্ষক প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষণের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শুধু অর্থ নয় সময়ও একটা বিশাল ব্যাপার।’

জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ সম্পর্কে মুহিত বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রতিজ্ঞা হোক। এক. আমরা সবাই শিক্ষিত হব। অন্তত মাধ্যমিক পর্যন্ত। দুই. বঞ্চিত, বিপর্যস্ত, প্রতিবন্ধী জাতিগোষ্ঠীকেও টেনে তুলব। সবাই অন্তত মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করবে। প্রথমটি নিজের জন্য। দ্বিতীয়টি সমাজের জন্য।’

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এবং মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন।

শিক্ষা সপ্তাহর উদ্দেশ্য তুলে ধরে শিক্ষা সচিব বলেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রের প্রতিটি অঙ্গনে যারা যোগ্যতর, মেধাবী, অবদান রেখে চলেছেন তাদেরকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাচন করা হয়। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালার মাধ্যমে বাছাই প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। নির্ভুলভাবে যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত ব্যক্তিদের সম্মানিত করা হয়।’

এ সময় তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন তিনি। শিক্ষকদের অবসরকালীন ভাতা নিশ্চিত করার জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সকাল ৯টায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শোভাযাত্রাটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সামনে থেকে শুরু হয়ে হাই কোর্টের মোড় ঘুরে মৎস ভবন পার হয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট চত্বরে এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় শিক্ষা সচিব, মাউশির মহাপরিচালক, বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, মাউশি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট চত্বরে অর্থমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব, মাউশির মহাপরিচালক বেলুন পায়রা উড়িয়ে শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধন করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে আগামী ২৮ মে ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানমালার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

সপ্তাহব্যাপী আয়োজনে সারাদেশের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কেরাত, হামদ, নাত, সাহিত্য সংস্কৃতিসহ ১৪টি বিষয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে।

প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে।



মন্তব্য চালু নেই