রাজধানী সচল হলেও মহাসড়ক অচল

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের মধ্যে রাজধানী ঢাকার চিত্র স্বাভাবিক। অফিস-আদালত সবই খোলা। রাজপথে বিপুলসংখ্যক যানবাহন। কোথাও কোথাও যানজট। হরতালকারীদের নেই কোন তৎপরতা। স্বাভাবিক দিন আর হরতালের দিনের যেন কোন তফাৎ নেই। তবে মহাসড়কগুলোর চিত্র আলাদা। আমাদের আঞ্চলিক সংবাদদাতাদের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মহাসড়গুলোয় এখনও প্রায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে। দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা একেবারেই কম। তবে জেলা থেকে জেলাগামী কিছু বাস চলছে। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল করছে অল্প সংখ্যক। সব মিলিয়ে ২০-২৫ ভাগ যানবাহন চলাচল করছে মহাসড়কে। বেশির ভাগ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

তবে একের পর এক যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে উঠতে চাইছেন না যাত্রীরা। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের বার্ষিকীকে ঘিরে গত ৩রা জানুয়ারি থেকেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। প্রথমে দুই দিন পালিত হয় অনেকটা সরকারি অবরোধ। ৬ই জানুয়ারি থেকে চলছে বিরোধী জোটের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ। এরই মধ্যে নানা মেয়াদে পালন হচ্ছে হরতাল। সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন ছিল গতকাল। এদিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, বাংলামোটর, কাওরান বাজার, মিরপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় যানজট দেখা গেছে। গণপরিবহনের পাশাপাশি রাজপথে বিপুলসংখ্যক ব্যক্তিগত গাড়িও দেখা গেছে। অবরোধের প্রথম দিকে রাজধানীতে যানবাহনের পরিমাণ কম ছিল। তবে দিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। যদিও পেট্রলবোমা হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের কারণে মানুষের মনে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে দিনের বেলা রাজধানীর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও রাতে যান চলাচল কমে যায় ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের কারণে। রাতে প্রায় দিনই রাজধানীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

ফেনী থেকে দূরপাল্লার তেমন কোন বাস ছাড়ছে না, ফেনীতে আসছেও না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী এলাকা দিয়ে দূরপাল্লার কিছু যানবাহন চলাচল করছে। যার বেশির ভাগই পণ্যবাহী ট্রাক। পুলিশ-বিজিবিসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় এসব যানবাহন চলাচল করছে। তবে সব মিলিয়ে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় যানবাহন ৮০ ভাগ কম। এর মধ্যেও প্রায় প্রতিদিনই যানবাহনে হামলার ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ বুধবার রাতেও অন্তত তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায়ও খুব বেশি যানবাহন চলাচল করছে না। যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা কম। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় কিছু যানবাহন চলাচল করছে।

ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে যানবাহনের পরিমাণ অবরোধের প্রথম দিকের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনও কমপক্ষে শতকরা ৭৫ ভাগ পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাসের সংখ্যা একেবারেই কম। কিছু সংখ্যক ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল করছে। হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মহাসড়কে টহল জোরদার করছে। তবে এরই মধ্যে হামলার ঘটনাও ঘটছে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে কিছু যানবাহন চলাচল করছে। তবে দূরপাল্লার বাস একেবারেই চলাচল করছে না। মালবাহী ট্রাক চলাচল করছে। স্থানীয় কিছু যানবাহনও চলাচল করছে। সব মিলিয়ে ১৫-২০ ভাগ যানবাহন চলাচল করছে। তবে মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের মতো জোরদার নেই। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধের প্রথম দিকের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করায় যানবাহন চলাচলে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। সব মিলিয়ে ৩৫-৪০ ভাগ যানবাহন চলাচল করছে। হবিগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে কোন বাস যাত্রা করছে না। ঢাকা থেকে কোন বাস হবিগঞ্জ আসছে না। তবে ছোট যানবাহনগুলো চলাচল করছে।-মজমিন।



মন্তব্য চালু নেই