রাজধানীবাসীর নিরাপত্তায় ডিএমপির উদ্যোগ

গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর আতঙ্কে দিন কাটছে রাজধানীবাসীর। তবে নগরবাসীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে মাঠে নেমেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

নগরবাসীকে নিরাপত্তা দিতে ডিএমপির পক্ষ থেকে বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, রাজধানীতে নিরাপত্তাব্যবস্থার চিত্রই পাল্টে গেছে। সড়ক ও ভবনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

তিনি জানান, ভাড়াটিয়ার তথ্য ফরম কারা জমা দিয়েছে আর কারা দেয়নি তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে যারা ফরম জমা দিয়েছে, তারা সব তথ্য দিয়েছে নাকি কিছু গোপন করেছে, সেগুলোও যাচাই করা হচ্ছে।

রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ির সামনে ও প্রতিষ্ঠান বাইরে-ভেতরে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। বাসায় প্রবেশের সময় গেটে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। বিভিন্ন অফিসে আগত দর্শনার্থীদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। পাশাপাশি যানবাহনে তল্লাশির জন্য রাখা হয়েছে ভেহিকল সার্চ মিরর। মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি অনেক বাড়িতে আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা হচ্ছে। বাড়ির চারদিকের দেয়ালের ওপর সুরক্ষিত গ্রিল বা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থী প্রবেশের ক্ষেত্রে দর্শনার্থীর নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর খাতায় লিপিবদ্ধ করা জন্য রেজিস্টার খাতা রাখা হয়েছে। রাজধানীর বেশকিছু বাড়ির চারদিকে লাইট লাগানো হচ্ছে। বাড়ির প্রবেশমুখে রাখা হয়েছে লাগেজ স্ক্যানার। রয়েছে সিকিউরিটি গার্ডও।

রাজধানীর ৪৯টি থানায় কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের তথ্য ফরম পূরণের উদ্যোগ দেওয়া হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে ২০ লাখ ফরম। তবে পূরণ করা ফরম জমা পড়েছে ১৮ লাখ। ভাড়াটিয়াদের ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া বাসা ভাড়া না দেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জননিরাপত্তার স্বার্থে ডিএমপি কমিশনারের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়ির নিরাপত্তায় সব ব্যবস্থা রাখা উচিত বলে মনে করছেন বনশ্রীর একটি বাড়ির মালিক মনির হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশ উদ্যোগ খুব ভালো। বাড়িওয়ালাদের নিজ দায়িত্বে এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত, যাতে জঙ্গিরা কোনোভাবে আস্তানা গাড়তে না পারে। আর যেসব বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়া ফরম পূরণ না করে বাড়ি ভাড়া দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ মেস সংঘের মহাসচিব আয়াতুল্লা আক্তার বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু যেসব ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড হয়নি, তাদের পিতা-মাতার কার্ড নিয়ে ভাড়া দিতে হবে। ডিএমপি কমিশনারকে সবাই সহযোগিতা করলে রাজধানী হবে জঙ্গিমুক্ত।

তিনি আরো বলেন, তথ্য ফরম পূরণ করার নিয়ম আগে ছিল না। যেহেতু পুলিশের নির্দেশনা আছে, তাই মেস মেম্বারদের অবশ্যই করা উচিত।

১৯৯৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, রাজধানীতে মেস বাসিন্দার সংখ্যা ১০ লাখ। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মেস বাসিন্দার সংখ্যা।



মন্তব্য চালু নেই