যে বয়সে শিশু-কিশোরদের স্কুলে যায় , সেই বয়সে ওরা নৌকার বৈঠায় খুঁজে নিচ্ছে ওদের ভবিষ্যৎ

যে বয়সে শিশু-কিশোরদের স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে ওরা নৌকার বৈঠায় যেন খুঁজে নিচ্ছে ওদের ভবিষ্যৎ। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এসব শিশু কিশোররা মাঠে-ঘাটে কাজ করার পাশাপাশি বছরের অধিকাংশ সময় নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। অভিভাবকদের অসচেতনতা আর অবহেলাই এর কারণ ওরা নৌকার বৈঠায় খুঁজে নিচ্ছে ভবিষ্যৎ ।

অনেক ক্ষেত্রে দায়ী করা হচ্ছে দারিদ্রতাকেও। দেখা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার মাঝের চর, ভেলুমিয়া ও বিভিন্ন চরাঞ্চলে বসবাসরত অধিকাংশ শিশু কিশোররাই স্কুলে যায় না। তাদের সচেতনতার জন্য এগিয়েও আসছেনা কেউ। গ্রহণ করছে না বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাটুকুও। শিশুরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে নৌকা নিয়ে উওাল মেঘনা- তেতুলিয়া তীরে ছুটে যাচ্ছে মাছ ধরতে। দেখা যায়, এ সকল এলাকায় বসবাসকৃত অধিকাংশ মানুষ নিন্মবিত্তের।

তারা বার বার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নি:স্ব হয়েছে। তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য একমাত্র আয়ের উৎস নদীতে মাছ ধরা ও বিক্রি। প্রাকৃতির দুর্যোগ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে যেন তাদের সঙ্গে আষ্টে-পৃষ্টে বাধা। তাই সংগ্রামের মাঝেই টিকে থাকতে হচ্ছে তাদের। ফলে এ সকল শিশুরা ইচ্ছা থাকলেও উপায়হীন। কোন কোন শিশু স্কুলে ভর্তি হলেও স্কুল শেষে বাড়ী ফিরতে না ফিরতেই দু’মুঠো অন্ন জোগাতে বাবার সাথে নৌকা আর বৈঠা নিয়ে ছুটে যায় মেঘনার বুকে। এমনই চিত্র ভোলার ৭টি উপজেলার চরাঞ্চলগুলোতে।

একাধিক শিশু- কিশোরের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, তারা স্কুলে যায় না, বাবার সাথে মেঘনা নদীতে মাছ ধরে। বাবা তাদেরকে স্কুলে যেতে বলে না। এ কারণেই তারা স্কুলে যাচ্ছে না। মেঘনার পাড়ে বসবাসরত অভিভাবক ইউসুফ মাঝি বলেন, ‘৬টা পোলা-মাইয়া স্ত্রীসহ ৮ জন। অভাবের সংসারে প্রতিদিন মাছ ধরে যে টাকা পাই তা দিয়ে সংসার চলে না, পোলা-মাইয়ার পড়া- লেহা করামু কেমনে।’



মন্তব্য চালু নেই