যেখানেই বাধা, সেখানেই রামপালবিরোধীদের সমাবেশ

‘যেখানেই বাধা, সেখানেই সমাবেশ’- পূর্বের এই ঘোষণা অনুযায়ী বাধা পেলেই সমাবেশ করছে ঢাকামুখী রামপালবিরোধীরা। দেশের সাতটি প্রান্ত থেকে ঢাকামুখী রামপালবিরোধীদের কোথাও কোথাও বাধা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে যেখানেই বাধা পাচ্ছে, সেখানেই সমাবেশ হচ্ছে বলে জানিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।

‘রামপাল চুক্তি ছুড়ে ফেল, সুন্দরবন রক্ষা কর’- এই স্লোগানে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার শুরু হয়। কর্মসূচির সমর্থনে ওইদিন সন্ধ্যায় খুলনায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মশাল মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। ছাত্র ইউনিয়নের অফিস পুলিশ ঘেরাও করে রাখে বলে জানান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স।

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে খুলনা শহরে সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা হবে। এছাড়া এদিন রাজধানী ঢাকার লালবাজারে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধন থেকে দুজনকে আটক করে পুলিশ। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দিয়েছে।

পুলিশ জানায়, মানববন্ধনের অনুমতি না থাকায় তাদের আটক করা হয়েছিল।

রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী যেখানে বাধা আসছে, সেখানেই সমাবেশ করছে সুন্দরবন রক্ষাকারী রামপালবিরোধীরা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে রামপালবিরোধী সমর্থক শুভানুধ্যায়ীরা শনিবার মহাসমাবেশ সফল করবেই।

এর আগে সুন্দরবন রক্ষা ও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রতিবাদে ঢাকামুখী যাত্রা ও মহাসমাবেশে যেখানেই বাধা আসবে, সেখানেই সমাবেশ করা হবে জানিয়েছিলেন তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ। ২২ নভেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান।

শনিবার বেলা ২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ২৪ নভেম্বর দেশের সাতটি প্রান্ত থেকে ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি শুরু হয়। আজ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন।

খুলনার রামপাল, রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুরের পঞ্চগড়, ময়মনসিংহের নেত্রকোনা, চট্টগ্রামের কক্সবাজার, বরিশালের পটুয়াখালী ও সিলেটের সুনামগঞ্জ থেকে এই যাত্রা শুরু হয়েছে। পথিমধ্যে তারা জেলায় জেলায় পদসভা করতে করতে শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছাছে। এতে দেশের অধিকাংশ বামদলগুলো অংশগ্রহণ করছে।

সুন্দরবন রক্ষা ও রামপাল প্রকল্পের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি বাগেরহাট সার্কিট হাউজ থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এছাড়া শহরের সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন চত্বর থেকে জেএসডি’র মিছিলপূর্বক সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

আয়োজক সংগঠন তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে দল-মত নির্বিশেষে লক্ষাধিক জনতা এই মহাসমাবেশে উপস্থিত হবে। মহাসমাবেশ সফল করতে এরইমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শনে যাওয়ার আগে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘ঢাকামুখী যাত্রায় কোথাও কোথাও পুলিশ বাধা দিচ্ছে। কিন্তু যেখানেই বাধা দেওয়া হচ্ছে সেখানেই সমাবেশ করা হচ্ছে।’

শনিবার মহাসমাবেশের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। আশা করছি সরকার বাধা দেবে না। এ ব্যাপারটা আমরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জানিয়েছে।’

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দিয়ে সরকার সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আনু মুহাম্মদ।



মন্তব্য চালু নেই