যুক্তরাষ্ট্রে ভালো করছেন অন্য দেশের চিকিৎসকেরা

এক পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অন্য দেশের চিকিৎসকেরা ভালো করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা চিকিৎসকের তুলনায় আন্তর্জাতিক (যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য দেশ থেকে মেডিকেল ডিগ্রি নেওয়া) চিকিৎসকের কাছে মৃত্যুঝুঁকি কম। এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ ২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী মেডিকেল সাময়িকী ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) ছাপা হয়েছে।

গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের আন্তর্জাতিক চিকিৎসকের হাতে মৃত্যুঝুঁকি ১১ দশমিক ২ শতাংশ, তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের হাতে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের হাতে মৃত্যুঝুঁকি দশমিক ৪ শতাংশ মান (পার্সেন্টেজ পয়েন্ট) বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের তুলনায় আন্তর্জাতিক চিকিৎসকেরা দীর্ঘদিন রোগে ভোগা বেশিসংখ্যক রোগীর সেবা দেন।

গবেষণায় ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১২ লাখ ১৫ হাজার ৪৯০ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন ৪৪ হাজার ২২৭ জন চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে ১৯ হাজার ৫৮৯ জন বা ৪৪ দশমিক ৩ জন ছিলেন আন্তর্জাতিক চিকিৎসক। আন্তর্জাতিক চিকিৎসকেরা তুলনায় কম বয়সী ছিলেন।

দুই ধরনের চিকিৎসকদের মান যাচাইয়ের জন্য গবেষকেরা হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর মৃত্যু হার, পুনর্ভর্তির তথ্য এবং চিকিৎসা ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, পুনর্ভর্তির হার দুই ধরনের চিকিৎসকের ক্ষেত্রেই সমান। তবে প্রতিটি পুনর্ভর্তির খরচ আন্তর্জাতিক চিকিৎসকদের সেবা পাওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে সামান্য বেশি।

গবেষণা প্রবন্ধের ভূমিকাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকদের এক-চতুর্থাংশ আন্তর্জাতিক। যুক্তরাজ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী চিকিৎসকেরা যান প্রধানত ভারত, আয়ারল্যান্ড ও পাকিস্তান থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে যান মূলত ভারত, ফিলিপাইন ও পাকিস্তান থেকে। বিদেশি চিকিৎসকদের পেশাচর্চার অনুমোদনের ক্ষেত্রে ভিন্নতা আছে। যুক্তরাজ্যে পেশাচর্চার অনুমতি পেতে তাঁদের ইংরেজি ভাষা, চিকিৎসাবিজ্ঞান ও লিঙ্গুইস্টিক বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে দুটো পরীক্ষার দরকার হয়। প্রথমত, তাঁর চিকিৎসাজ্ঞানের পরীক্ষা নেওয়া হয়। দ্বিতীয় ক্লিনিক্যাল দক্ষতা যাচাই করা হয়। এ ছাড়া তাঁদের অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রে আবাসিক প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ করতে হয়।

গবেষকেরা বলছেন, রোগীরা যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকের তুলনায় আন্তর্জাতিক চিকিৎসকদের কাছে কম সুস্থ হবে বা কম ভালো থাকবে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই তথ্য এমন ইঙ্গিত দেয় যে আন্তর্জাতিক চিকিৎসক বাছাইপ্রক্রিয়ার মান ভালো



মন্তব্য চালু নেই