যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড: আপিল বিভাগ

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ৩০ বছরের সাজা নয়, তা আমৃত্যু কারাদণ্ড হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ। মঙ্গলবার সাভারের এক হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার এক আদেশে আপিল বিভাগ এই কথা বলেন।

আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

আদালত থেকে বের হয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু (ন্যাচারাল লাইফ) কারাবাস। তখন আমি এর প্রতিবাদ করেছি। আমি বলেছি, দণ্ডবিধির ৫৭ ধরায় যাবজ্জীবন দণ্ড অর্থ ৩০ বছর। এছাড়া যাবজ্জীবনের আসামিরা কারাগারে রেয়াত পেয়ে দণ্ড আরও কমে আসে। যদি আমৃত্যুই হয়ে থাকে তাহলে এদের রেয়াতের কি হবে?

তিনি বলেন, ‘আমি আরও বলেছি, প্রধান বিচারপতির এ মন্তব্য যেন মূল রায়ে না থাকে। তবে এটা যদি থাকে তাহলে সব আসামির ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে।’

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, সাভারের তিনজনের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হয়। তবে আদেশে বলা হয়েছে, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর নয়, আমৃত্যু কারাদণ্ড। তখন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মূল রায়ে এটার ব্যাখ্যা থাকবে।

এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাদণ্ডই হবে। আগে এসব আসামিকে দ্বীপান্তর করা হত। এটা যখন উঠে গেল, তখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করা হল। এখন সময় বিবেচনা করা হয়।

জানা গেছে, ২০০১ সালে সাভারে জামান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০০৩ সালে দ্রুত বিচার আদালত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। হাইকোর্টে আপিলের পর বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল থাকে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিরা। ওই আবেদনের শুনানি শেষে ওই তিনজনের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন আদালত।



মন্তব্য চালু নেই