সাতক্ষীরার কলারোয়ার খবর

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, চারণ রাজনীতিক মমতাজ আহমেদের স্মরণ সভায় গুনিজনদের সম্মাননা প্রদাণ

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮নং ও ৯নং সেক্টরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা, প্রাক্তন এমসিএ, এমএলএ, এমপিএ, চারণ রাজনীতিক, শিক্ষানুরাগী, প্রথিতযশা সাহিত্যিক ও সমাজসেবক প্রয়াত মমতাজ আহমেদের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ ওয়ার্কার্সপার্টির কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরো সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ’র সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই স্মরণসভাটি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার দুপুরের দিকে বোয়ালিয়ায় মমতাজ আহমেদের হাতে গড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও শিশু পার্কের পাখির কলরবে সবুজ কাননের নিরিবিলি চত্বরে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অবদানের জন্য ৩০জন গুনি ব্যক্তিকে সম্মনানা পদক প্রদাণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার (আলফা কোম্পানী, সাতক্ষীরা অঞ্চল) মাহবুব উদ্দিন আহমদ, বীরবিক্রম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসম্প্রাদায়িক বাংলাদেশ গড়ার আজীবন স্বপ্ন ছিলো মমতাজ আহমেদের দু’চোখ জুড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহকর্মী হিসেবে ছায়ার মতো অবস্থান ছিলো তাঁর। তাঁর মতো নির্লোভ, সৎ রাজনীতিবিদের কোনো গুণবাচক শব্দই তাঁর গুণের কাছে যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের সংবিধানে রয়েছে মমতাজ আহমেদের স্বাক্ষর। তিনি আজ আমাদের মাঝে না থাকলেও রয়েছে তাঁর পদচিহ্ন। এই পদচিহ্নের আলোকবর্তিকা পথ দেখাবে আগামি দিনের। মমতাজ আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদাচ্ছেরুল হোসেন, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আলী আহমেদ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলারোয়ার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম, সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু, মুক্তিযোদ্ধা সদর কমান্ডার হাসানুল ইসলাম, কলারোয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সা.সম্পাদক মোস্তফা ফারুকুজ্জামান, অধ্যক্ষ নজিবুল ইসলাম, অধ্যক্ষ এসএম সহিদুল আলম, অধ্যক্ষ আবির হোসেন বিলাল, এড. আসাদুজ্জামান দিলু, এড. কাজী আব্দুল্লাহ আল হাবিব, আরএম ফরহাদ, ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ কালাম, ভুট্টোলাল গাইন, আফজাল হোসেন হাবিল, দৈনিক জনকণ্ঠ’র স্টাফ রিপোর্টার মিজানুর রহমান, কলারোয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সা.সম্পাদক রাশেদুল হাসান কামরুল, সাংবাদিক শিক্ষক দীপক শেঠ, শেখ জুলফিকারুজ্জামান জিল্লু, অধ্যাপক কার্ত্তিক চন্দ্র মিত্র প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য এ জনপদের ৩০ গুণিজনকে ‘মমতাজ আহমেদ পদক’ প্রদান করা হয়। পদক হিসেবে সম্মননা ক্রেস্ট ও সনদ পত্র গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী প্রয়াত শ্যামাপদ শেঠ’র পক্ষে তার পুত্র শিক্ষক সাংবাদিক দীপক শেঠ সহ ৩০জন গুনি ব্যক্তির স্বজনরা। অনুষ্ঠানে মমতাজ আহমেদের জীবনী বিষয়ে আরএম ফরহাদ ও আরএম ফুয়াদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও অধ্যাপক আবুল হোসেনের সম্পাদনায় ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ নামের একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে সাংসদ এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, মমতাজ আহমেদের নামে নির্মাণাধীন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল তথ্যচিত্র থাকবে। এটি হবে একটি গবেষণাগার। যেখানে এদেশের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের বিভিন্ন নিদর্শন ও বই সংরক্ষিত থাকবে। থাকবে বিভিন্ন প্রমাণ্য চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা। যেনো আগামি প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চিত্র এই মমতাজ আহমেদ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এসে দেখতে পারে। আগামি ৬ ও ৭ ডিসেম্বর যথাক্রমে কলারোয়া ও সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস যথাযথভাবে পালনের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহবান জানান। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর ৯৬বছর বয়সে কলারোয়ার বোয়ালিয়া গ্রামের নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন সাবেক গণ পরিষদ সদস্য জননেতা মমতাজ আহমেদ।

                                    এক সন্তানের জননীর আত্মহত্যা
এক সন্তানের জননী স্বামী পরিত্যক্তা এক মহিলা আত্মহত্যা করেছে। আয়শা খাতুন (৩০) নামের ওই মহিলা গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের হাওয়ালখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাওয়ালখালী গ্রামের শাহাদত হোসেন টিক্কার মেয়ে আয়শা খাতুন পারিবারিক ও ব্যক্তিগত অশান্তির কারণে শনিবার বেলা ১১টার দিকে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় শ্বাসরুদ্ধ করে আত্মহত্যা করে। পরে পরিবারের অন্যরা জানতে পেরে দরজা ভেঙ্গে তার লাশ উদ্ধার করে। আত্মহননকারী আয়শা খাতুনের বৃষ্টি নামের ৪বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বছর সাতেক আগে আয়শা খাতুনের সাথে কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা গ্রামের সোহরাব হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে আয়শা খাতুন হাওয়ালখালীর বাপের বাড়িতে বসবাস করতেন। খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে সদর থানা পুলিশ তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।

        কলারোয়ায় ‘মমতাজ আহমেদ পদক’’র ক্রেস্ট ও সনদ পেলেন ৩০গুনিজন
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, রাজনীতিক, সাহিত্যিক ও সমাজসেবক প্রয়াত মমতাজ আহমেদ স্মরণে ‘মমতাজ আহমেদ পদক’ পেয়েছেন কলারোয়া অঞ্চলের ৩০জন গুনি ব্যক্তি। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে শনিবার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্বরে মমতাজ আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ জনপদের ৩০ গুণিজনকে ওই পদক প্রদান করা হয়। পদক প্রাপ্ত গুণিজনের মধ্যে রয়েছেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাবেক এমপি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিএম নজরুল ইসলাম, যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা KaLaroa pic-08কমান্ডার মোসলেম উদ্দীন, স্বর্গীয় শ্যামাপদ শেঠ, প্রয়াত ইন্তাজ আহমেদ, প্রয়াত ওয়াজেদার রহমান খাঁন চৌধুরী, প্রয়াত কাজী আশরাফ হোসেন (সোনা কাজী), অহেদ আলি মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার আব্দুর রউফ, আব্দুল মোতালেব মাস্টার, প্রয়াত চাঁদ আলী সরদার, প্রয়াত শিক্ষক আব্দুল জব্বার, স্বর্গীয় তারক ঘোষসহ ৩০ জন গুনি ব্যক্তি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মাননা পাওয়া গুণি ব্যক্তিবর্গ বা তাঁদের পরিবারের সদস্যের মাঝে পদক হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদাণ করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন (অব.) মাহাবুব উদ্দীন বীরবিক্রম, সাংসদ এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদাচ্ছেরুল হোসেন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন, কলারোয়া থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম, মমতাজ আহমেদ পুত্র অধ্যাপক এমএ ফারুক সহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ গুণিজনদের ‘মমতাজ আহমেদ পদক’ প্রদান করেন।



মন্তব্য চালু নেই