মীর কাসেমের রিভিউয়ের রায় ৩০ আগস্ট

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর রিভিউয়ের শুনানি শেষ হয়েছে। তবে রায় ঘোষণা হবে আগামী ৩০ আগস্ট। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায়ের দিন ঠিক করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় রিভিউ শুনানি শুরু হয়।

এটাই মীর কাসেমের আইনি প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। আদালত যদি তার রিভিউ খাঁরিজ করে দেন তাহলে বাকি থাকবে কেবল রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনা। এর আগে মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধীকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ঘোষণার নজীর নেই।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে এ শুনানি হয়। বেঞ্চের অন্য চার বিচারপতি হলেন-বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার এবং বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান। মীর কাসেম আলীর পক্ষে শুনানি করছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এ আবেদনের দ্রুত শুনানি চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আনা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করেন। ২৫ জুলাই শুনানিতে আসামিপক্ষ সময় আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন ২৪ আগস্ট নির্ধারণ করেন আদালত।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ জুন প্রকাশ করা হয়। এরআগে গত ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করে আপিল বিভাগ। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাশেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

যে অভিযোগে কাসেমের ফাঁসি

জামায়াতের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মীর কাসেম আলীকে ১১ নম্বর অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হয়।অভিযোগে বলা হয়েছে- ১৯৭১ সালে ঈদুল ফিতরের পরের যে কোনো একদিন মীর কাসেমের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে আলবদর বাহিনীর সদস্যরা চট্টগ্রাম শহরের কোনো এক অজ্ঞাত স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরণ করে আন্দরকিল্লার ডালিম হোটেলে নিয়ে যায়। তাকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলে জসিমের মৃত্যু হলে আরো পাঁচজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশসহ তার মৃতদেহ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালে তিন বিচারকের ঐক্যমতের ভিত্তিতে এ অভিযোগে মীর কাসেমের ফাঁসির রায় হয়। আপিলেও তা বহাল থাকে। এছাড়া আরও ছয় অভিযোগে মোট ৫৮ বছরের কারাদণ্ডের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ।



মন্তব্য চালু নেই