মীর কাসেমের রায় আজ
জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়ার কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় আজ রোববার ঘোষণা করা হবে।
আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন।
জামায়াতের প্রভাবশালী এ নেতার আইনি লড়াইয়ের ফলাফল জানতে সকলের দৃষ্টি থাকবে ট্রাইব্যুনালের দিকে। তেমনি রায়-পরবর্তী সহিংসতা নিয়েও উৎকণ্ঠা রয়েছে সবার মনে।
এটি মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১তম মামলার রায়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার মীর কাসেমের মামলার রায় ঘোষণার দিন রোববার ধার্য করেন উক্ত বেঞ্চ।
গত ৪ মে এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
মীর কাশেম আলীর পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর প্রসিকিউশনের পক্ষ হতে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
এর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তার যুক্তি উপস্থাপন করেন। অন্যদিকে এ মামলায় গত ২৭ ও ২৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ সীমন ও ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ যুক্তি উপস্থাপন করেন
যুক্তি উপস্থাপন শেষে প্রসিকিউশন দাবি করেছেন, তারা মীর কাসেম আলীর অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ জন্য তারা মীর কাশেম আলীর সর্বোচ্চ শাস্তিরও দাবি করেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষ দাবি করেছেন, মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রসিকিউশন তাদের অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আশা করছেন তিনি খালাস পাবেন।
গত বছরের ১৬ মে আইনজীবী জেয়াদ আল মালুমসহ প্রসিকিউশন টিম ১৪টি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করেন। এবং ২৬ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।
মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে আনিত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ ছাড়া অন্য সব অভিযোগে আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।
১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২৮ নভেম্বর শহীদ জসিমসহ ছয়জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
১২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ তিনজনকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এরপর সেখান থেকে দুইজনকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়।
এ ছাড়া বাকি সবগুলো অভিযোগই আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের উদ্বোধনী বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ১১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীকে ১৪টি ঘটনায় অভিযুক্ত করে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।
মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ ছাড়া বাকি সব অভিযোগই অপহরণ করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।
গত বছরের ৬ মে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪ টি অভিযোগ চুড়ান্ত করে প্রসিকিউশনের জমা দেয় তদন্ত সংস্থা।
২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওইদিন বিকেলে মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেম আলীকে কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মন্তব্য চালু নেই