মীর কাসেমকে নিয়ে টেনশনে সরকার

জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত। এই রায়ে সরকার সন্তুষ্ট। তবে এখনও সরকারের ভেতর পুরোপুরি স্বস্তি ফিরে আসেনি। টেনশন বাড়ছে। তার রিভিউ আবেদনের শুনানি ও এর রায় হতে দেরি হওয়ার কারণেই এর আগে থেকেই তাদের উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বাড়ছিলো। সরকারের সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রীর মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠাও বাড়ায় ও কি হতে পারে সমুহ বিপদ আশঙ্কা করে তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিকরণ ও নাশকতার ঘটনা ঠেকানোর জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছিলো। রিভিউ খারিজের পর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায় তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। তবে রায় কার্যকর করা না পর্যন্ত তারা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা এবং শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না।

এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মীর কাসেম আলীর চুড়ান্ত রায় হয়েছে। এখন এই রায় কার্যকর করার জন্যও আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে বিচার কাজ বন্ধ করা, তাকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য তিনি নানা দিক থেকে লবিং করেন। তিনি এই জন্য প্রচুর টাকাও ব্যয় করেছেন। এখনও তিনি সব কর্মকান্ড বন্ধ করিয়ে দিয়েছেন এমনটি মনে করা যাচ্ছে না। কারণ তার লোকজন ও অনুসারী দেশে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে। নাশকতার ঘটনা ঘটাতে পারে। এমনকি কারাগারেও তারা নানা ধরণের সমস্যার তৈরি করতে পারে। দেশি বিদেশি যে সব মহলের তিনি তার লোকেরা তদবীর করছিলেন বিচার বানচাল করার জন্য তারা নানা ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাদের ওই চেষ্টা আমরা সফল হতে দিবো না। এই জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দারা কাজ করছে। তার লোকেরা নাশকতার ঘটনাও ঘটাতে পারেন। এই কারণে এই রায় দ্রুত কার্যকর করা প্রয়োজন।

সূত্র জানায়, মীর কাসেমের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখার পর সরকার কোন ধরনের ঝুঁিক নিতে চায়নি। এই কারণে রায় কার্যকর করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আদালতের রায়ের কপি ট্রাইব্যুনাল হয়ে কারাগারে পৌছাঁনো হয়েছে। কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। তার আতœীয় ও পরিবারের সদস্যরাও কাসেমপুর কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। এখন ম্যাজিস্ট্রেটরা যাবেন তার সঙ্গে দেখা করতে। তারা তার কাছে জানতে চাইবেন তিনি প্রাণ ভিক্ষার আবেদন জানাবেন কিনা? জানালে এই ব্যাপারে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। আর না চাইলে তার রায় কার্যকর করতে বাঁধা থাকবে না। সরকার রায় কার্যকর করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, তারা জানতে পেরেছেন মীর কাসেম আলী তার ছেলেকে বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে ফেরত না পাওয়ার আগে তিনি প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা তার কালক্ষেপনের একটি কৌশল বলেই সরকার মনে করছে। এই সময় নিয়ে যে কোন সময়ে মীর কাসেম ও তার লোকেরা যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটনোর চেষ্টা করতে পারেন। সরকার সেই রকম কোন সুযোগ দিবে না। আর সেই জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছেন। বিকল্প চিন্তা হিসাবে এটাও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেমন করে তার বিরুদ্ধে রায় কার্যকর করা হবে।

এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মীর কাসেমের ফাঁসি যথাসময়ে হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে তার ফাঁসির রায় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী কার্যকর করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, যে আমেরিকা একদিন বাংলাদেশকে তাচ্ছিল্য করেছে সে দেশই আজ বহির্বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই