লুট হওয়া অস্ত্র ফেরত

মিজানুর নিহতের ঘটনায় মিয়ানমারের ভুল স্বীকার

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দু’দফা গুলিবর্ষণের ফলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনা ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমার।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে এ ভুল স্বীকার করা হয়।

সীমান্তের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত এ পতাকা বৈঠকে নিহত মিজানুরের লুট হওয়া একটি এসএমজি, চারটি ম্যাগজিন ও ১২০ রাউন্ড গোলাবারুদ ফেরত দেয়া হয়।

বৈঠক শেষ করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিজিবির প্রেসব্রিফিং এ এসব তথ্য জানানো হয়। বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল খোন্দকার ফরিদ হাসান জানান, বৈঠক ফলপ্রসু ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালের জেনেভা কনভেনশন উপেক্ষা করে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে মিয়ানমারের সেনা মোতায়েন, গত ২৮ মে বিনা কারণে ৫২ পিলারের অদূরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে টহল দেয়া বিজিবি সদস্যের ওপর গুলিবর্ষণের নায়েক সুবেদার মিজানুর নিহতম, ৩০ মে নিহতের লাশ গ্রহণকারীদের ওপর নির্বিচার গুলিবর্ষণ, মর্টালশেলের মতো অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়।

এছাড়া সীমান্তে চোরাচালান-ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য পাচার রোধ ও উভয় দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে কর্মকৌশল প্রণয়ন বিষয়ে ৫টি এজেন্ডা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে আর জেনেভা কনভেশন লঙ্ঘন করে সীমান্তে সেনা মোতায়েন না করার নিশ্চয়তা দেন। এসময় রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসওর সশস্ত্র অপতৎপরতা রোধ করতে গিয়ে ২৮ মে ও ৩০ মে সীমান্তে গুলিবর্ষণের ঘটনাকে দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করে ভুল স্বীকার ও দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে নিহত বিজিবি সদস্যের কাছ থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তান্তর করেন।

দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ইউনিফরমের স্বচ্ছতা বজায় রাখা, যৌথভাবে সীমান্ত পিলার চেকিং ও সমন্বিত টহল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল খোন্দকার ফরিদ হাসান। তার সঙ্গে ছিলেন- নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সফিকুর রহমান, রামু ৫০ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল তইয়ুমুর কায়কোবাদ, কক্সবাজার ১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম, টেকনাফ ৪২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদসহ ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের মংডুস্থ ইমিগ্রেশন হেড কোয়ার্টাসের ডাইরেক্টর ব্রিগেডিয়ার থিং কু কু। তার সঙ্গে ছিলেন ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল।



মন্তব্য চালু নেই