মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ৬ যুবকের মৃত্যু

নরসিংদীতে দালাল চক্রের খপ্পড়ে পড়ে সমুদ্র পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে মারা গেছে ছয় যুবক। দালাল চক্র তাদের লাশ বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিয়ে বাকিদের মালয়েশিয়া নিয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে নিহতদের দুই সহযাত্রী মালয়েশিয়া পৌঁছে ফোনে নিহতদের পরিবারকে এসব তথ্য জানিয়েছে। ঘটনার পর নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম, গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নরসিংদী সদর উপজেলার নুরালাপুর গ্রামের ছয় যুবক হাশেম, কাউছার, মহসিন, আসাদ, মোতালিব, মাসুম, পার্শ্ববর্তী আটালিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর ও আড়াইহাজার এলাকার আমিনুল ইসলাম স্থানীয় টেক্সটাইল মিলে কাজ করত। ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে দালাল চক্রের খপ্পড়ে পড়ে ওই আট যুবক সমুদ্র পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ২৮ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

বেশ কিছুদিন দালালদের সঙ্গে থেকে সমুদ্রপথে জাহাজযোগে রওয়ানা দেয় মালয়েশিয়ায়। এরপর থেকে পরিবারের লোকজন আর কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না তাদের।

বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ হাশেম মালয়েশিয়া থেকে ফোন করেন তার মা জামেলা খাতুনের কাছে। ফোনে হাশেম জানান, জাহাজে প্রচণ্ড পানির পিপাসা ও খাবারের অভাবে শত শত মালয়েশিয়াগামীদের মধ্যে তার মামা জাহাঙ্গীরসহ ২৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে ৬ জনের বাড়ি নরসিংদীর নুরালাপুর ও আটালিয়া গ্রামে।

মালয়েশিয়ায় পৌঁছে চারদিন পর সুস্থ হয়ে উঠে মোবাইল ফোনে একই ধরনের খবর জানান নারায়গঞ্জের আড়াইহাজার এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে সহযাত্রী আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, দালালরা নিহতদের সবার লাশ নদীতে ফেলে দিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া অবস্থায় বাকিদের পৌঁছে দিয়েছে মালয়েশিয়ায়।

মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে যুবকদের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো নুরালাপুর ও আটালিয়া গ্রামজুড়ে। শোকে পাথর হয়ে গেছে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।

মাধবদী ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর বাদশা জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ছয় মাসে নদী পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ধরা পড়াদের মধ্যে শুধুমাত্র নরসিংদী জেলার রয়েছে প্রায় এক হাজার মানুষ।



মন্তব্য চালু নেই