ইউপি নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

ভোটার করা হয়নি বিলুপ্ত ছিটমহলে

কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়াসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরের সদ্যবিলুপ্ত ১১১ ছিটমহলের বাসিন্দাদের এখনো ভোটার করা হয়নি। তাই আসন্ন ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে বা মার্চ মাসের শুরুতে। কিন্তু ভোটার না করায় সদ্যবিলুপ্ত ১১১ ছিটমহলের নারী-পুরুষরা তাতে তারা অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

বিগত ৬৮ বছর বন্দিজীবনের অবসান ঘটলেও প্রত্যক্ষভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ হয়নি এখানকার নাগরিকদের। এবার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থী নির্বাচন করে অবহেলিত এলাকায় উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে তাদের। কিন্তু ইতিমধ্যে ছয় মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় ছিটমহলগুলোতে এ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। ফলে এসব বাংলাদেশি নাগরিকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা আর ক্ষোভ।

ইউপি নির্বাচনে তাদের মাঝে প্রথম ভোট দেওয়ার উৎফুল্লতা থাকলেও এখনো তথ্য সংগ্রহকারীর দেখা মেলেনি বিলুপ্ত এসব ছিটে।

দাসিয়ারছড়ার বাসিন্দা মকবুল হোসেন জানান, আমরা ফুলবাড়ি উপজেলার অন্য নাগরিকের মতো যে ইউনিয়নের বাসিন্দা হব সেখানকার ভোটার হয়ে ভোট দিতে চাই। কিন্তু এখনো আমাদের তথ্য সংগ্রহ করে ভোটার তালিকায় নাম প্রকাশ করা হয়নি।

দাসিয়ারছড়া বিলুপ্ত ছিটের সাবেক সভাপতি আলতাব হোসেন জানান, আমরা দাসিয়ার ছড়াবাসীরা এখানে নতুন একটি ইউনিয়নের দাবি করেছিলাম। কিন্তু শুনেছি সরকার তা না করে পাশের তিনটি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করবে। আমরা সাবেক ছিটবাসীরা যেকোন একটি ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হতে চাই। আমরা চাই দ্রুত আমাদের দাসিয়ারছড়াসহ ১১১টি ছিটমহলের বিষয়টি চূড়ান্ত করে আগামী ইউপি নির্বাচনে ভোট দেওয়া ও অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, নির্বাচন কমিশন থেকে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা কে কে কোন ইউনিয়নে সংযুক্ত হচ্ছেন তা তালিকা করে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন যখন চূড়ান্ত করে গেজেট পাঠাবে তখনই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশের মানচিত্রে নতুনভাবে যোগ হয়েছে ১১১ ছিটমহল যাদের জনসংখ্যা ৪১ হাজার। কিন্তু তারা কোন ইউনিয়নের আওতায় থাকবেন কিংবা তাদের কোন ওয়ার্ডে ভোটার হিসেবে ঠাঁই হবে তা জানেন না বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দারা। তারপরও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে ভোট দেওয়া ও অংশগ্রহণের আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা।



মন্তব্য চালু নেই