ভিন্ন আমেজে বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস পালন

দেশের মানুষ এ বছর এমন একটি প্রেক্ষাপটে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করছে যখন একাত্তরের সেই যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচার কাজ এগিয়ে চলছে। মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে অনেকের ফাঁসি হয়েছে, অভিযুক্ত অনেকের বিরুদ্বে ফাঁসির রায় ঘোষিত হয়েছে। এছাড়া বুদ্ধিজীবী হত্যার দুই মূলহোতা চৌধুরী মুইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানেরও ফাঁসির আদেশে হয়েছে। দেশের কৃতী সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারীদের বিচার হচ্ছে এবং বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে—এই স্বস্তি নিয়েই জাতি আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করছে।

মুক্তিযুদ্ধে যারা নানা অপরাধ এবং ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিলো, চার দশক ধরেও তাদের শাস্তি হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত হচ্ছে। মানবতাবিরোধী হত্যা মামলায় দণ্ডিত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। জামায়াতের অপর নেতা মো. কামারুজ্জামান এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম হোতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে ।

১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক আলবদর নেতা মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আনা ১১টি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

মুক্তিযুদ্ধকালে মুঈনুদ্দীন ছিলেন আলবদর বাহিনীর অপারেশন ইনচার্জ এবং আশরাফুজ্জামান ছিলেন চিফ এক্সিকিউটর। তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে নির্যাতনের পরে হত্যা করা হয়। মুঈন বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ও আশরাফ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাস করছেন।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত হিসেবে প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দণ্ডাদেশ কার্যকর হয়েছে। এ জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারগুলোকে।

জাতির প্রত্যাশা, জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের যারা হত্যা করেছে তাদের বিচারের রায কার্যকর করে, দেশকে কলংক মুক্ত করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই